X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন চালু হবে কবে?

হিটলার এ. হালিম
২৪ মার্চ ২০১৬, ১৩:০৬আপডেট : ২৪ মার্চ ২০১৬, ১৩:১৩

সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন চালু হবে কবে? দেশে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা সংকট, এটিএম কার্ড জালিয়াতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পরও সাইবার খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনও তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে না। ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন (আইএসএস) চালুতে ভর করেছে ধীরগতি। কবে নাগাদ এই সেবা চালু হবে সে বিষয়ে স্পষ্টত কিছু জানা যাচ্ছে না।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডট (ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকম) এরই মধ্যে এ বিষয়ক প্রকল্প জমা দিয়েছে। এখন এটা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাবে।

টেলিযোগাযোগ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এম রায়হান আখতার জানান, বড় বড় হ্যাকিং, বড় ধরনের কোনও অপপ্রয়াস এর মাধ্যমে ঠেকানো যাবে। তিনি বলেন, আমরা আইআইজি, আইটিসি ও আইএসপি লেভেলে হাত দেব। এখানে আর কারও হাত না দিলেও চলবে। তবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্থাকে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। ওইসব জায়গায় হাত দিতে গেলে বিশাল অংকের অর্থের প্রয়োজন হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, এটা কে করবে? এখানে সমন্বয় সাধনের একটি বিষয় রয়েছে।   

এদিকে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। গত ডিসেম্বরে সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি বলেন,বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেল) রয়েছে। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন কেনার বিষয়ে আরও পর্যালোচনা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন। বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে শিগগিরই ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন দেশে আনা হচ্ছে। এই টুলের মাধ্যমে ইন্টারনেট, ওয়েব পোর্টাল ও কনটেন্ট ফিল্টারিং করা হবে।

প্রসঙ্গত, দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থায় নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে কনটেন্ট ফিল্টারিং ব্যবস্থা (ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন) চালু করতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। তবে এই প্রযুক্তিকে ব্যক্তি ও ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলেও মনে করেন অনেকে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোতে (আইআইজি) স্থাপন করা হবে কনটেন্ট ফিল্টারিং প্রযুক্তি। আইআইজিগুলোয় এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংযোজন করা হলে ওয়েব ইন্টারফেসের মাধ্যমে এর মূল নিয়ন্ত্রণ থাকবে বিটিআরসির হাতে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে জড়িত ওয়েবসাইটগুলো থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমন বিষয় শনাক্ত করে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

জানা যায়,সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোসহ সামগ্রিক ইন্টারনেট ব্যবস্থায় নজরদারি (ফিল্টারিং) করার জন্যে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোয় (আইআইজি) সরকার বিশেষ প্রযুক্তি বসানোর চিন্তাভাবনা করছে। প্রতিটি আইআইজিতে এ প্রযুক্তি বসানোর পর ইন্টারনেটের নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণের মূল ক্ষমতা তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হাতে থাকবে। রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায় এমন ওয়েবসাইটগুলো থেকে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি সেটি শনাক্ত করা যাবে এবং বিটিআরসি তা বন্ধ করে দিতে পারবে।

গত ১৯ নভেম্বর সচিবালয়ে ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন (আইএসএস) সম্পর্কিত সভায় সাইবার অপরাধকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ, ব্যক্তি পর্যায়ে নাগরিকের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে অপরাধ –এই তিনভাগে ভাগ করা হয়। সভায় বলা হয়, ব্যক্তি নাগরিকের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভাগের আওতায় কার্যক্রম পরিচালিত হতে হবে। আর সংস্থার (ব্যাংক, বীমা) বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে তাদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এরপরও অপরাধ সংঘটিত হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বা আইসিটি বিভাগ বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি যথাযথ কারিগরি এবং স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করে সহযোগিতা দেবে।  

আইএসএস ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠকে (৩ সেপ্টেম্বরে)এ সংশ্লিষ্ট কানেক্টিভিটি অবকাঠামো, সব ডাটা (তথ্য) মনিটর করা হবে কিনা, কোন ডাটা মনিটর করা হবে তা কোন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে, মাসিক প্রতিবেদন কোথায় পাঠাতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পৃক্ততা কিভাবে নির্ধারিত হবে, দেশের স্পর্শকাতর ডাটা কোথায় সংরক্ষণ করা হবে সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।    

/এইচএএইচ/এমএসএম/আপ-এপিএইচ/

 

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল কার্যালয়ে ঠিকাদারকে মারধর২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ