X
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

বাবার কোলে আর ওঠা হবে না আরিয়ানের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৪ আগস্ট ২০১৯, ০১:১৫আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০১:২১

ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল শিশু আরিয়ানের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে ভর্তি ছিল ৮ বছরের শিশু মো. আবরার হক কাওসার আলী শেখ আরিয়ান। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকালে চিরবিদায় নেওয়ার আগে বাবার কাছে তার শেষ আকুতি ছিল কোলে ওঠার। তবে বাবা তার শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারেননি। সন্তানকে শেষ সময়ে একটু কোলে তুলে নিতে না পারার কষ্ট নিয়ে বিলাপ করে কথাগুলো বলছিলেন বাবা মো. মাহতাব আলী শেখ।

ঢাকার শিশু হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আরিয়ান বিকালে মারা যায়। রাত সাড়ে ৯টায় যখন মাহতাব আলী শেখের সঙ্গে কথা হয় তখন তিনি সন্তানের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন। জানালেন গ্রামের বাড়িতেই আরিয়ানকে কবর দেওয়া হবে।

কবে থেকে আরিয়ান অসুস্থ জানতে চাইলে মাহতাব আলী জানান, গত শনিবার রাত থেকে আরিয়ানের জ্বর। পরদিন রবিবার রক্ত পরীক্ষার জন্য তাকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। রিপোর্ট দিলে দেখা যায় আরিয়ানের ডেঙ্গু পজিটিভ। সেদিনই আরিয়ানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে চার দিন চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা জানান, ‘বাচ্চার অবস্থা সিরিয়াস, আপনারা আইসিইউতে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।’

এরপরই আরিয়ানকে ঢাকা শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আজ বিকালে সে মারা যায়।

 এক ভাই এক বোনের মধ্যে আরিয়ান ছিল বড়, তার আড়াই মাস বয়সী একটি বোন রয়েছে। পেশায় গাড়িচালক মাহতাব আলী বলেন, ‘ছেলেটার সঙ্গে আজকেও কথা হইছে, কিন্তু বুঝি নাই ওটাই শেষ কথা।’ কী কথা হয়েছিল জানতে চাইলে মাহতাব আলী বলেন, ‘ছেলেটা তখন আইসিইউর বেডে, সিরিয়াস অবস্থা। ডাক্তারকে বললাম, স্যার একটু ছেলেটার সঙ্গে দেখা করতে চাই, দেখা করা যাবে। ডাক্তার দেখা করার অনুমতি দিলেন। গিয়ে দেখি, ছেলেটার মুখে অক্সিজেন লাগানো। সে অবস্থাতেই সে আমাকে বলে, আব্বু আমার অনেক কষ্ট হইতেছে, আমাকে তোমার কোলে নাও’, বলেই কেঁদে দেন মাহতাব আলী। নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ কথা শোনার পর আমি ডাক্তারের দিকে তাকালাম, কিন্তু ছেলেরতো স্যালাইন লাগানো, তাকে কোলে নিবো কী করে, ডাক্তারও নিষেধ করলেন। তখন ছেলের মাথা, মুখে আদর করলাম, বললাম-বাবা ঠিক হয়ে যাবে। এর কিছুক্ষণ পরেই আমি ওষুধ আনতে গেছি ফার্মেসিতে, তখনই ফোন, ডাক্তার আমাকে খুঁজতেছে।’

মাহতাব বলেন, ‘দৌঁড়ে আসার পর ডাক্তার বললেন, আরিয়ান যেকোনও মুহূর্তে চলে যেতে পারে, তারে রাখার মতো কোনও পরিস্থিতি নাই। ডাক্তার এ কথা বলার ১০ মিনিটের মধ্যেই ছেলেটা চলে গেল, আমার ছেলেটা আমার কোলে উঠতে চাইছিল, ছেলেটাকে কোলে নিতে পারলাম না, আর কখনও পারবো না। ছেলেকে বলছিলাম, সব ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু কিছুই ঠিক হলো না’, কাঁদেন মাহতাব আলী।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল থেকে দেওয়া আরিয়ানের ডেথ সার্টিফিকেটে দেখা যায়, আরিয়ান ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ছিল।

 

/জেএ/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভোট ছাড়াই চেয়ার দখল করতে বগুড়া চেম্বারের কার্যালয়ে তালা
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিভোট ছাড়াই চেয়ার দখল করতে বগুড়া চেম্বারের কার্যালয়ে তালা
ফিরে দেখা: ৩ জুলাই ২০২৪
ফিরে দেখা: ৩ জুলাই ২০২৪
টিভিতে আজকের খেলা (৩ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৩ জুলাই, ২০২৫)
কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এনসিপির তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ
কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এনসিপির তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ
সর্বাধিক পঠিত
নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
সংযুক্ত কর্মচারী প‌রিষ‌দের জরু‌রি সভানবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
বরখাস্ত হলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি
বরখাস্ত হলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
কার দোষে শ্রমবাজার বন্ধ হয় জানালেন আসিফ নজরুল
কার দোষে শ্রমবাজার বন্ধ হয় জানালেন আসিফ নজরুল
কেমন কেটেছিল ডিবি হেফাজতে ছয় সমন্বয়কের সাত দিন
কেমন কেটেছিল ডিবি হেফাজতে ছয় সমন্বয়কের সাত দিন