X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কদর বাড়ছে কুমড়ো বড়ির

আব্দুর রউফ পাভেল, নওগাঁ
০৮ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৩৪আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৩৪

মাসকলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় কুমড়ো বড়ি। এই বড়ি দিয়ে কৈ, শিং বা শোল মাছের ঝোল বেশ জনপ্রিয়। কুমড়ো বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময় শীতকাল। তাইতো নওগাঁর আত্রাইয়ের নারীরা ব্যস্ত কুমড়ো বড়ি বানানোয়। বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে এই বড়ি হাত বদলে চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।

আত্রাই উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের লতা মহন্ত কুমরো বলেন, ‘এলাকার শত শত নারী কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে এখন ব্যস্ত। শীতের আসার সঙ্গে সঙ্গে কুমড়ো বড়ি তৈরির ব্যস্ততা বেড়ে যায়। আশ্বিন মাস থেকে ফাল্গুন এই ছয় মাস কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায়। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করা হয়। শীতে চাহিদা থাকায় গ্রামাঞ্চলের নারীরা বাড়তি আয়ের জন্য কুমড়ো বড়ি তৈরি করেছেন।’

তিনি জানান, এক কেজি কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে প্রায় ১২০ টাকার মতো খরচ হয়। আর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। কুমড়ো বড়ি

উপজেলার কুমড়ো বড়ির ব্যবসায়ী উজ্জল চন্দ্র বলেন, ‘এখানকার কুমড়ো বড়ি সুস্বাদু হওয়ায় এই অঞ্চলের বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বিশেষ করে ঢাকা, যশোর ও খুলনায় এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।’

আরেক ব্যবসায়ী গৌড় চন্দ বলেন, ‘এখানকার বড়ি সারাবছরই তৈরি হয়। তবে শীতকালে কদর বেশি। কারণ, শীতের সময় রান্না করে খেতে বেশি মজা। বিশেষ করে দেশী মাছের সঙ্গে। বড়ি বানানো থেকে শুরু করে সব কাজই বাড়ির মেয়ে বা নারীরা করে থাকেন।’

কুমড়ো বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়া আর সামান্য মসলা। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মাসকলাই ১০০ থেকে ১২০ টাকা আর চাল কুমড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাইজ হিসেবে চাল কুমড়া ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে কিনতে হয়। পাঁচ কেজি চাল কুমড়ার সঙ্গে দুই কেজি মাসকলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়ো বড়ি ভাল হয়। প্রথমে মাসকলাই রৌদ্রে শুকিয়ে যাতায় ভেঙে পরিষ্কার করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা মাসকলাই পানিতে ভেজাতে হয়। তারপর ঢেঁকি অথবা পাটায় পিষে কুমড়ো বড়ির মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এরপর দুইটির মিশ্রণে কুমড়ো বড়ির উপকরণ তৈরি হয়। রৌদ্র উজ্জ্বল ফাঁকা স্থান, বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ বা খোলা জায়গায় ভোর থেকে বড়ি তৈরি করা শুরু হয়। পাতলা কাপড়ে সারি সারি বড়ি রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। কুমড়ো বড়ি বানানোর পর দুই থেকে তিন দিন টানা রোদে শুকাতে হয়। সূর্যের আলো কম হলে তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত লাগে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, ‘শীত মৌসুমে এই উপজেলার নারীরা কুমড়ো বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করে থাকে। গ্রামীণ নারীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা পেলে তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন।’

/এনএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!