X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার সঙ্গে বসবাস: নার্সের এক বছরের অভিজ্ঞতা

আমিনুল ইসলাম বাবু
০৩ মে ২০২১, ১৯:৪৯আপডেট : ০৩ মে ২০২১, ১৯:৫০

‘একবার অল্পবয়সী এক অন্তঃসত্ত্বা নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হলেন হাসপাতালে। আমাদের এখানেই তার সন্তান প্রসব হয়। সুস্থ ফুটফুটে জন্ম নেওয়া সন্তানটি বাড়ি চলে যায়। কিন্তু তার মা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার এই মৃত্যুর কথা মনে হলে এখনও চোখে পানি চলে আসে’—কথাগুলো বলছিলেন এক নার্স। ঢামেক হাসপাতালে করোনা ইউনিটে গত বছরের মে  থেকে কাজ করছেন তিনি। যদিও পরিচয় প্রকাশে বারণ করেন তিনি। ওই নার্সের ভাষায়, ‘আমাদের পরিবারের লোকজন জানে আমি এখানে কাজ করি। ঢাকায় আমি যেখানে থাকি, একা থাকি। পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখনও আমার নাম জানলে অযথা আশেপাশের মানুষজন ভয় পায়। এখনও বেশিরভাগ মানুষ বুঝতে চায় না, করোনায় সাবধানতা অবলম্বন করলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

এই যে করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করছেন ভয় লাগে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রথম ভয় লাগতো, এখন আর কিছুই মনে হয় না’। তিনি জানান, করোনার শুরুতে তার ডিউটি দেওয়া হয় করোনা ইউনিটে, দেওয়া হয় সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পোশাক। সেসব পোশাক পরে শুরু করেন তার ডিউটি। ‘প্রথম প্রথম ভয় পেয়ে ছিলাম, বেশ কয়েক মাস সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) পরেই কাজ করতাম। পরে এক সময়, তা আর না পরে চালিয়ে যাই’—বলেন তিনি।

নিজেকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখতেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখেন বিষয়টি সম্পূর্ণ নিজের কাছে। নিজেকে কিভাবে সুরক্ষা দেবেন এ জন্য হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় সব কিছুই দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক কাজ করলেই হয়। আমি প্রথমে সেভাবেই কাজ করছিলাম। আমার অভিজ্ঞতায় দেখলাম হাত ও মুখ সেফ থাকলেই সব সেফ। তাই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরতে কখনও ভুল করিনি’।

এক বছরের একা জীবনে কখনো হতাশ লেগেছে কিনা প্রশ্নে তিনি হেসে বলেন, ‘এভাবেই কাজ করে আসছি, প্রতিদিন কাজ শেষে বাসায় গিয়ে গোসল করে ফেলি। কাপড় ধুয়ে ফেলি। আরেকটি বিষয় আমি বাসায় একাই থাকি। আমাদের এখানে চৌদ্দ দিন ডিউটি করলে পরে চৌদ্দ দিন ডিউটি অফ থাকে। আমার এক সন্তান গ্রামের বাড়িতে থাকে। সেসময়টায় মাঝেমধ্যে বাড়িতে তার কাছে যাই। আল্লাহর রহমতে এখনও ভালো আছি।’

একেবারে শুরুর দিকের অভিজ্ঞতার বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করেন শুরুর দিকে করোনা রোগীর স্বজনরাও তার রোগীর কাছে যেতো না। সে সময় থেকে আমরাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী  সেবা দিয়েছি। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। তারপরও মানুষের মধ্যে ভয় আছে। হাসপাতালে এলে তারা ভয় পায়। বাইরে কোথায় করোনা আছে তা জানা নাই কিন্তু তারা ভয় পায় না। ভয় কেবল এখানে।’ কথাগুলো তড়িঘড়ি করে কাজে ফিরে যাওয়ার সময় বলেন, ‘দোয়া করবেন, আল্লাহর রহমত ও মানুষের দোয়া থাকলে এভাবেই যেন ডিউটি করে যেতে পারি।’

 

/ইউআই/এমআর/
সম্পর্কিত
সিলেটে আবারও শুরু হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
আরও ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা