X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যম মুক্ত ও স্বাধীন: তথ্যমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৩ মে ২০২১, ২০:৪৬আপডেট : ০৩ মে ২০২১, ২১:২১

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আশাবাদ ব্যক্ত করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের অপরিসীম শক্তি। যার মুখে ভাষা নেই তাকে যেন ভাষা দিতে পারে। যে স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে তাকে স্বপ্ন দেখাতে পারে। যার কাছে ক্ষমতা নেই, তাকে ক্ষমতাবান করতে পারে। মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সমাজের অব্যক্তদের পক্ষে যেভাবে গণমাধ্যম কথা বলছে সেটি যেন আরও জোরালো হয়। যারা স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে তারা গণমাধ্যমের ওপর ভরসা করে যেন স্বপ্ন দেখে।’

মন্ত্রী দাবি করেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যম যেমন স্বাধীন এবং মুক্তভাবে কাজ করছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য তা অবশ্যই একটি উদাহরণ এবং একইসঙ্গে অনেক উন্নত দেশের তুলনায়ও এই দেশের গণমাধ্যম মুক্ত ও স্বাধীন।’

সোমবার (৩ মে) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রী কবি ও সাংবাদিক মিজান মালিকের ‘মন খারাপের পোস্টার’ কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।

ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনও পত্রিকায় যদি ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয়, তার প্রতিবাদ জানালে সংবাদটা যে মাত্রায় পরিবেশিত হয়েছিল প্রতিবাদটা সেই মাত্রায় ছাপানো হয় না। এ দেশে ভুল, অসত্য সংবাদ পরিবেশনের জন্য পত্রপত্রিকার কোনও জরিমানা গুনতে হয় না, যেটি উন্নত দেশে গুনতে হয়। উন্নত দেশগুলোতে কোনও ভুল, সংবাদ অসত্য সংবাদ বা কারও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, হস্তক্ষেপ হয়েছে এমন সংবাদ পরিবেশিত হলে কেউ যখন আইনের আশ্রয় নেন, তাদের জরিমানা গুনতে হয়। এটি বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা না, নিয়মিতই সেটি হয়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১১ সালে যুক্তরাজ্যে পৃথিবীর একসময়কার সবচাইতে বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড-এ একটি অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হওয়ার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক বছর আগে বিবিসিতে একজন এমপির বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশিত হওয়ার কারণে বিবিসির পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। আমাদের দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটে না।’

মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমকে বহুমাত্রিক সমাজের অন্যতম পূর্বশর্ত হিসেবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীন বিকাশ ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজের বিকাশ সম্ভবপর নয়, সে বিশ্বাসেই আমাদের সরকারের হাত ধরে দেশে বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারের যাত্রা শুরু হয়েছে, যেটি আগে ছিল না।’

সব দেশেই ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইন করা হয়েছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় গ্রেফতার বিষয়ে দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংগঠনের বিরূপ মন্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের ও বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম নিয়ে যেসব সংগঠন বিবৃতি দেয় তাদের সঙ্গে একমত হওয়ার কারণ নেই। তারা নির্দিষ্ট কিছু জায়গা থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। আমাদের কাছে বা তথ্য কমিশনের কাছেও কোনও তথ্য চায় না। তাদের ঢালাও মন্তব্য ঠিক নয় এবং আমরা এগুলোর সঙ্গে একমত নই। পৃথিবীতে আগে ডিজিটাল বিষয়টা ছিল না অর্থাৎ ডিজিটাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও যখন ছিল না, তখন সেখানে নিরাপত্তার জন্য কোনও আইনেরও প্রয়োজন ছিল না। যখন সেটি এসেছে তখন আইনেরও অবশ্যই প্রয়োজন আছে।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিজিটাল সিকিউরিটির জন্য সাইবার সিকিউরিটি-২০১৫, ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৯ ফ্রেমওয়ার্ক ল’ করেছে, যেটির অধীনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মেম্বার স্টেটরা প্রত্যেকে আবার নিজেরা আইন করেছে। অস্ট্রেলিয়া সাইবার ক্রিমিনাল অ্যাক্ট-২০০১, সিঙ্গাপুর সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ করা হয়েছে, পাশাপাশি আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারত, পাকিস্তান, নেপাল সব দেশেই ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইন করা হয়েছে বলে জানান ড. হাছান।

মন্ত্রী বলেন, ‘সবারই ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই আইন। অনেক সাংবাদিক এই আইনের আশ্রয় নিয়ে মামলা করেছেন। সেই সঙ্গে এ আইনের অপপ্রয়োগ যেন না হয়, কোনও সাংবাদিক যেন হয়রানির শিকার না হন, সেটির সাথে আমি অবশ্যই একমত।’

কিছু কিছু ঘটনা গণমাধ্যমে যেভাবে আসার কথা ছিল সেভাবে আসেনি

গণমাধ্যমের ওপর মানুষের আস্থা কমছে কিনা ও নানামুখী চাপের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমের ওপর বাংলাদেশের মানুষের যথেষ্ট আস্থা আছে, না থাকলে এত টেলিভিশনও চলতো না, এত পত্রিকাও বের হতো না, পাঠক সংখ্যাও বাড়তো না। সম্প্রতি কিছু কিছু ঘটনা গণমাধ্যমে যেভাবে আসার কথা ছিল সেভাবে আসে নাই। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচণ্ড সমালোচনা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তো সরকারের পক্ষ থেকে কোনও কিছু বলা হয়নি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অর্থ-বিত্ত-বৈভব-শক্তি-ক্ষমতায় যে যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন, সত্য সংবাদ অবশ্যই পরিবেশিত হওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে গণমাধ্যমের দায়িত্ব শুধু নেতিবাচক সংবাদই প্রচার করা নয়, সমাজের সার্বিক চিত্র পরিস্ফুটন করা। এই করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের অভিযাত্রা থমকে দাঁড়ায়নি- এই সাফল্যের গল্পগুলো গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আসা প্রয়োজন। তাহলে জাতি আশাবাদী হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে।’

মন্ত্রীর সঙ্গে কবি মিজান মালিক, সাংবাদিক সাঈদ আহমেদ, খায়রুল আলম, আশীষ সেন, আলমগীর স্বপন বইটির মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।

/এমএইচবি/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
‘চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে’
অগ্নিসন্ত্রাসের মূলোৎপাটন নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ: তথ্যমন্ত্রী
জনগণ ও নির্বাচন কমিশনকে তথ্যমন্ত্রীর ধন্যবাদ
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!