X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১
স্মরণে সুবীর নন্দী

‌‘সবসময় তিনি আমাদের মা বলে ডাকতেন’

বিনোদন রিপোর্ট
০৭ মে ২০২১, ০১:৩৬আপডেট : ০৭ মে ২০২১, ১৬:১৮

২০১৯ সালের এই রাতে (৭ মে) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিংবদন্তি শিল্পী সুবীর নন্দী। পার হলো দুটি বছর। তার অবর্তমানেও তিনি সমানভাবে রয়েছেন বাংলা সংগীতে; শ্রোতাদের কর্ণকুহরে।

সুবীর নন্দী যাওয়ার আগে কাটিয়ে গেছেন পূর্ণাঙ্গ, পরিচ্ছন্ন ও সফল জীবন। এক সাক্ষাৎকারে বলে গেছেন, তার মৃত্যুতে যেন কেউ না কাঁদেন। তার মেয়ের মতোই ছিলেন কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী। স্মৃতি থেকে তিনি বলেন, ‘‘সুবীর কাকার সাথে আমি আর সুমা (সামিনা চৌধুরী) ‘ফেরারী বসন্ত’ ছবিতে গান করেছিলাম। ছবিতে বাবা এবং দুই কন্যার কণ্ঠে গানটি ছিল। বাবার কণ্ঠ দিয়েছেন সুবীর কাকা আর দুই মেয়ের কণ্ঠ দিয়েছি আমরা দুই বোন। কাকার সঙ্গে এই গানটি গাওয়া আমাদের কাছে সৌভাগ্যের মতোই ছিল।’’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘সুবীর কাকা আব্বার (কিংবদন্তি শিল্পী মাহমুদুন্নবী) গানের ভক্ত ছিলেন। আব্বাকে অনুসরণ করতেন। আব্বার ১০টি গান দিয়ে একটি অ্যালবামও করেছেন তিনি। সেই তখন থেকে কাকার প্রতি আমাদের ভক্তি ছিল বাবা আর সন্তানের মতো। সব সময় আমাদের তিনি মা বলে ডাকতেন, যেমন ডাকতেন তার একমাত্র সন্তান মৌকে।’

স্মৃতি হাতড়ে ফাহমিদা নবী বলেন, ‘‘আমি ‘সুরের আয়না’ নামের একটি টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতাম। সেটির প্রথম পর্বে সুবীর কাকাকে পেয়েছিলাম। সেই পর্ব করতে গিয়ে কাকাকে নানা কথা জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পেয়েছিলাম। বললাম, কাকা প্রতিটি মানুষের কত রকমের ইচ্ছা থাকে। আপনার একটা ইচ্ছার কথা বলেন। এমন প্রশ্নের জবাবে একটু আবেগ ভরা কণ্ঠে সুবীর কাকা বলেছিলেন একেবারে অচেনা অসাধারণ একটা কথা। যেমন কথা আমরা সচরাচর শুনি না। তিনি আমাকে বললেন, ‘আমার শেষ ইচ্ছা মৃত্যুর পর কেউ যেন না কাঁদে। আমি চাই আমার শবদেহের কাছে এসে সবাই যেন গান শোনায়।’’

একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সংগীতশিল্পী ১৯৬৩ সালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনার সময় থেকেই গান গাওয়া শুরু করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে তিনি সিলেট বেতারে গান করেন। তার গানের ওস্তাদ ছিলেন গুরু বাবর আলী খান। লোকগানে ছিলেন বিদিত লাল দাশ।

সুবীর নন্দী গানের জগতে আসেন ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম রেকর্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে। প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। গানটি লিখেছেন মোহাম্মদ মুজাক্কের এবং সুরারোপ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।

৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যাংকেও কর্মরত ছিলেন।

সুবীর নন্দী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চারবার। সংগীতে অবদানের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক পান তিনি।

তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- আমার এ দুটি চোখ, বন্ধু হতে চেয়ে, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, চাঁদের কলঙ্ক আছে, দিন যায় কথা থাকে, একটা ছিল সোনার কন্যা, হাজার মনের কাছে, কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, পাহাড়ের কান্না, বন্ধু হতে চেয়ে তোমার প্রভৃতি।

১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর এই শিল্পী জন্মগ্রহণ করেন হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দীপাড়ার এক কায়স্থ সম্ভ্রান্ত সংগীত পরিবারে।

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
মৃত্যুর পাঁচ বছর পর নতুন গান!
মৃত্যুর পাঁচ বছর পর নতুন গান!
‘এই গানটি গাওয়া আমাদের কাছে সৌভাগ্যের মতোই ছিল’
স্মরণে সুবীর নন্দী‘এই গানটি গাওয়া আমাদের কাছে সৌভাগ্যের মতোই ছিল’
সুবীর নন্দী ও সঞ্জীব চৌধুরীর সন্ধি!
স্মরণসুবীর নন্দী ও সঞ্জীব চৌধুরীর সন্ধি!
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া