১৬ বছরের সম্পর্ক। মুহূর্তের এক ঘোষণায় তো আর শেষ হয়ে যায় না! আর সম্পর্রকটা যখন সের্হিয়ো রামোস ও রিয়াল মাদ্রিদের, তখন একবাক্যে বলে দেওয়া যায় ‘বিদায়’ শুধুই একটি শব্দ। মাদ্রিদের ক্লাবটির প্রতীক বললেও ভুল হবে না তাকে। সেই তার বিদায় বলার সময় চোখ গড়িয়ে জলধারা নেমে আসবে, সেটাও অনুমিত। আবার যখন বললেন, ‘একদিন আমি ফিরে আসবো’, সেই কথাতেও যেন প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি শোনা যায়।
সেই ২০০৫ সালে সেভিয়া থেকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পা রাখার পর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে হয়ে ওঠেন রিয়ালের অপরিহার্য অংশ। সময় গড়ানোর সঙ্গে আরও পরিণত হয়ে সময়ের তো বটেই সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন রামোস। তাতে রক্ষণ নিয়ে কখনও চিন্তায় পড়তে দেননি রিয়ালকে। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব রক্ষণের খুঁটি হয়ে ছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি। তবে সামনের মৌসুম থেকে সেই খুঁটি আর পাচ্ছে না লস ব্লাঙ্কোস।
৩৫ বছর বয়সী ডিফেন্ডার রিয়ালকে বিদায় বলে দিয়েছেন। বিদায় জানালেনও ‘ইতি’ টেনে দিচ্ছেন না রিয়ালের সঙ্গে সম্পর্কের। শিগগির না হলেও একদিন আবার বার্নাব্যুতে ফেরার অঙ্গিকার তার বিদায় বলার ঘোষণায়।
তবে খেলোয়াড় হিসেবে যে রিয়ালের সঙ্গে পথচলা শেষ হয়ে গেলো, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। রিয়ালের জার্সিতে আর মাঠ মাতানো হবে না, ১৬ বছর ধরে যে আলো-বাতাসে থেকেছেন, যে ড্রেসিংরুমে সময় কাটিয়েছেন, যে ভক্তদের সঙ্গে জয়োৎসব করেছেন- সেই সব আর পাওয়া হবে না। বিদায় বলে দেওয়ার সময় তাই আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
কান্নাভেজা চোখে রামোস বলেছেন, ‘সময়টা এসে গেছে, আমার জীবনের অন্যতম কঠিন মুহূর্ত। সময় এসেছে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলার। আমি আমার বাবার হাতে হাত দিয়ে এসেছিলাম...।’ কথাটা আর শেষ করতে পারলেন না এই ডিফেন্ডার। একটু গুছিয়ে নিয়ে আবার বলতে শুরু করলেন, ‘আবেগপ্রবণ না হওয়াটা অসম্ভব। আমি আমাদের স্টেডিয়াম, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বিদায় বলতে চেয়েছি।’
রিয়ালের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নতুন যাত্রায় সাফল্যের আশায় রামোস, ‘ধন্যবাদ রিয়াল মাদ্রিদ। আমি আমার হৃদয়ে সবসময় বহন করবো। আমার জীবনের চমৎকার, দুর্দান্ত একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি এবং নতুন আশা ও আরও কিছু দারুণ বছরের সূচনা হলো। যেখানে আরও কিছু সুন্দর বছর অপেক্ষা করছে আমার সেরাটা প্রদর্শন করার জন্য, আমি আমার প্রাপ্তির খাতায় আরেকটি ট্রফি যোগ করতে পারবো।’
এরপরই তিনি জানালেন, আবার ফিরবেন বার্নাব্যুতে, ‘সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এটা বিদায়ের চেয়ে বড় কিছু; আবার দেখা হবে, কারণ আমি ফিরে আসবো।’