X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১
রূপগঞ্জের অগ্নিকাণ্ড

সেজান জুসের কারখানায় বেশিরভাগই ছিল শিশুশ্রমিক

আমানুর রহমান রনি, নারায়ণগঞ্জ থেকে
১০ জুলাই ২০২১, ০০:২৬আপডেট : ১০ জুলাই ২০২১, ১৮:০৮

দেশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও শিশুদের দিয়েই চলছিল হাশেম ফুড লিমিটেডের সেজান জুস কারখানাটি। এসব শিশু শ্রমিকদের অল্প বেতনে খাটাতো প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি কয়েক মাসের বেতনও বকেয়া ছিল তাদের।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই শিশু বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা শ্রমিকরা।

কারখানাটির শ্রমিক রাজিব বলেন, এখানকার বেশিরভাগ শ্রমিক শিশু। তাদের মধ্যে যারা মেয়ে তাদের বয়স ১২ বছর থেকে শুরু আর ছেলেদের বয়স ১৪ থেকে শুরু।  দরিদ্র পরিবারের শিশুরা এখানে তিন হাজার থেকে শুরু করে ছয় হাজার টাকা বেতনে কাজ করে।

যে ভবনে আগুন লেগেছে সেই ভবনের পাশে একই কোম্পানির আরেকটি ভবনের দায়িত্বশীল একজন বলেন, মূলত কম বেতনের কারণেই মালিক শিশুদের নিয়োগ দিতেন।

শুক্রবার (৯ জুলাই) কারখানার প্রধান ফটকে অপেক্ষমাণ শ্রমিকরা জানান, দুজন ঠিকাদারের মাধ্যমে শিশুদের ভোলা ও কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হতো। এই শিশু শ্রমিকদের বেতন ধরা হতো খুবই কম। সাড়ে ছয় হাজার টাকা বেতনে তাদের চাকরি শুরু হতো। ছয় মাস পরে যাদের স্থায়ী (পার্মানেন্ট) করা হতো তাদের দেওয়া হতো ১০ হাজার ৫০০ টাকা। শুরুর দিকে হাতের কাজ করলেও চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর বিভিন্ন পণ্য তৈরির মেশিনের সহকারী হিসেবে কাজ করতো এই শিশুরা।

ভোলা ও কিশোরগঞ্জ থেকে যেসব শিশু নিয়ে আসা হতো তাদের একটি বড় অংশকে কারখানার পাশে কোয়ার্টারে রাখা হতো। সেখানে থাকা ও খাওয়া বাবদ এক হাজার টাকা প্রতি মাসে প্রত্যেক শিশুর কাছ থেকে নেওয়া হতো।

দুজন ঠিকাদারের মধ্যে ভোলা থেকে যে শিশুদের আনা হতো তাদের তত্ত্বাবধান করতেন মোতালিব। আর কিশোরগঞ্জ থেকে শিশুদের আনা ও তত্ত্বাবধান করতেন রাজ্জাক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডর পর প্রাণভয়ে এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে ছুটছিল শিশু শ্রমিকরা।

কারখানাটির ইলেকট্রিক বিভাগের একজন বলেন, আমি নিচে ছিলাম। আগুন লাগার পর কোথায় লাগছে তা দেখতে উপরে যাই। তখন অনেকগুলো ছেলে ও মেয়ে শিশুকে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে দেখি। আমি দোতলা পর্যন্ত উঠে আবার নিচ দিয়ে নেমে আসি। তখনও দেখেছি বাচ্চাগুলো ছুটছে। তারা শুধু ওপরে উঠছিল। শেষে চারতলায় গিয়ে আটকা পড়ছে, আর উপরে উঠতে পারে নাই।

অধিকাংশ মরদেহ ভবনের একই জায়গায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মোস্তাফিজ নামে একজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী বলেন, আগুনের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্করাই কী করবেন বুঝতে পারেন না, শিশুরা আরও বেশি আতঙ্কিত ছিলো যেকারণে তাদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, যদি কারখানাটি শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া যায়, তবে মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : জরিপ হয়নি পাঁচ বছর : দেশে শিশুশ্রমিক কত কেউ জানে না
ছোট কাঁধে বড় ভার

/এআরআর/এমএস/
সম্পর্কিত
ভাসানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ৫
রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন
তীব্র গরমের মধ্যে আগুনে পুড়লো চাঁদপুরের ১৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সর্বশেষ খবর
আরও কমলো সোনার দাম  
আরও কমলো সোনার দাম  
 ১ পদে ২৩৮ জনকে চাকরি দেবে ভূমি মন্ত্রণালয়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
 ১ পদে ২৩৮ জনকে চাকরি দেবে ভূমি মন্ত্রণালয়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
৬ মামলায় জামিন পেলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর
৬ মামলায় জামিন পেলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
স্কুল ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি