সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। দেশে যাতে কোনোভাবেই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ফিরে না আসে, সে বিষয়ে সরকার তৎপর রয়েছে।’
বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে অনুষ্ঠিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত অনুষ্ঠানে গরিব-অসহায়, কর্মহীনদের মধ্যে এ সময় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত থাকলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধানে “ধর্মনিরপেক্ষতা”র মূলনীতি লিপিবদ্ধ করেছিলেন।’
ফরিদুল হক খান বলেন, ‘এ দেশের উন্নয়ন যেমন আজকের বিশ্বের বিস্ময়, রোলমডেল; ঠিক তেমনি এ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’ তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।’
ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সময় স্বার্থান্বেসী মহল বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুন্দর পরিবেশকে নস্যাৎ করতে চেয়েছে। আমাদের সবাইকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের মহান লক্ষ্যে সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের কল্যাণে পর্যাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। যার সুফল সব সম্প্রদায়ের জনগণ ভোগ করছে।’
ফরিদুল হক খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ২০০৯-২০২১ সময়ে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের স্থায়ী মূলধন ২১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রথম সারাদেশে মন্দির ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ২২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৮১২টি মঠ/মন্দির/শ্মশান সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি কর্মসূচির অধীনে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মোট ১৯৯টি মঠ/মন্দির/শ্মশান সংস্কারের জন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে ২০০৯ হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩২৪টি মঠ/মন্দির/আশ্রম ও শ্মশান সংস্কার/উন্নয়নের জন্য ১৪ কোটি ৯১ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৫০ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক উন্নয়ন কার্যক্রম চালু রয়েছে।’
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী সুব্রত পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী মনোরঞ্জন শীল, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক শ্রী অসীম কুমার উকিল, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শ্রী সুজিত রায় নন্দী, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শ্রী নির্মল রঞ্জন গুহ, সিদ্ধেশ্বরী সার্বজনীন পূজা পরিষদের সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. দিলীপ কুমার ঘোষ প্রমুখ।
