দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল বাংলাদেশের। স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বটাই হয়ে দাঁড়ায় কণ্টকাকীর্ণ! শেষ পর্যন্ত পাপুয়া নিউগিনিকে বড় ব্যবধানে উড়িয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছে মাহমুদউল্লাহরা। তবে ৮৪ রানের দুর্দান্ত জয়ের পরও দুশ্চিন্তা কাটছে না!
নিখুঁত পারফরম্যান্সের বিষয় উঠে আসাতেই এত দুশ্চিন্তা। শুরুতে প্রতিপক্ষের টপ অর্ডার ব্যাটারদের দ্রুত ফিরিয়েও সুবিধা করতে পারছে না বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউগিনির ম্যাচে সেটাই দেখা গেছে। বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে নেমে এই ধরনের ভুলগুলো ভোগাতে পারে টিম বাংলাদেশকে।
পিএনজির মতো বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনেও স্কটল্যান্ডের ব্যাটারদের চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ৫৩ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ কিছু করার আভাস দিয়েছিলেন সাকিব-মেহেদীরা। কিন্তু বাকি চার উইকেট নিয়েই স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান তুলে ফেলে স্কটল্যান্ড। শুরুতে চেপে ধরা বাংলাদেশের বোলাররাই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন ক্রিস গ্রিভস-মার্ক ওয়াটদের কাছে। এই দুই ব্যাটারের কল্যাণে স্কটল্যান্ড স্কোরবোর্ডে ১৪০ রান তুলে ফেলে। লক্ষ্যটা খুব কঠিন না হলেও বাংলাদেশ ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচটি হেরে যায়।
বৃহস্পতিবার অবশ্য স্কটল্যান্ডের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবু ৯৭ রানে অলআউট হওয়া পিএনজিকে আরও আগেই অলআউট করা উচিত ছিল বোলারদের।
এদিন ২৯ রানে ৭ উইকেট হারায় আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশটি। তার পরেও লোয়ার অর্ডারের বাকি তিন উইকেট নিয়ে পুরোটা সময় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এই তিন ব্যাটার পিএনজির স্কোরবোর্ডে ৬৮ রান যোগ করেছেন। নিশ্চিতভাবেই সেখানে ব্যর্থতা ছিল বাংলাদেশি বোলারদের। লেট অর্ডারে নামা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কিপলিন ডোরিগা মোস্তাফিজ-সাইফউদ্দিনকে নিয়ে একাই খেললেন অনেকক্ষণ! ৩৪ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৪৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে বাংলাদেশের সঙ্গে হারের ব্যবধান কমাতে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। কিপলিন (৪৬) ও চ্যাড সপার (১১) ছাড়া কোনও ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি। পিএনজির ইনিংসে বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাখলেও স্লগ ওভারে এসে খেই হারায় তারা। বড় ম্যাচের আগেই এই জায়গায় উন্নতি খুব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর পাশাপাশি দল হিসেবে একসঙ্গে সব বোলার ক্লিক করতে পারছে না। আগের ম্যাচে ছন্নছাড়া বোলিং করেছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ। আজ তাসকিনের উন্নতি হলেও মোস্তাফিজ ভালো বোলিং করতে পারেননি। আইপিএলের শেষ দিকের বেশ কয়েকটি ম্যাচ থেকেই ফর্মহারা এই বাঁহাতি। তবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ভালো বোলিংয়ের পর মনে করা হচ্ছিল, ফর্মেই আছেন তিনি। কিন্তু ওমান ও পিএনজির বিপক্ষে বোলিং দেখে মোস্তাফিজকে বেশ ক্লান্ত মনে হয়েছে। এ কারণেই মূল পর্বে লড়াইয়ের আগে বাংলাদেশের মূল অস্ত্র মোস্তাফিজের ফর্ম নিয়ে চিন্তিত হওয়া লাগছে।
তবে আশার কথা হচ্ছে, আগের দুই ম্যাচের তুলনায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ব্যাটিংটা ভালোই হয়েছে। স্কটল্যান্ড ও ওমানের বিপক্ষে ব্যাটাররা পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেননি। তবে আজ পিএনজির বিপক্ষে শুরুতে একটি উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লে দারুণভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে সাকিব-লিটন জুটি। এদিন প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৪৫ রান। তাই দুশ্চিন্তার বোলিংয়ের মাঝে পাওয়ার প্লেতে সফল হওয়াটা স্বস্তির খবর বটে!