রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে বাষ্প জেনারেটর স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদীতে বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে সবগুলো বাষ্প জেনারেটর স্থাপনের কাজ শেষ। নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী ইউনিটের রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টে ডিজাইন পজিশনে ৪টি বাষ্প জেনারেটর স্থাপন সম্পন্ন করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের প্রকৌশল শাখার সাব কনট্রাক্টর প্রতিষ্ঠান এনার্গো স্পেকমন্তাঝ।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রোসাটমের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রোসাটমের প্রকৌশল শাখার এটমোস্ত্রয় এক্সপোর্টের (এএসই) ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আলেক্সি দেইরি এ বিষয়ে জানান, স্থায়ীভাবে বাষ্প জেনারেটর স্থাপনের মধ্য দিয়ে প্রথম ইউনিটে ইন্সটলেশন কাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় শেষ হলো। এখন প্রাইমারি সার্কিট ইকুইপমেন্ট যেমন রিয়্যাক্টর, বাষ্প জেনারেটর এবং মূল সার্কুলেশন পাম্পের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী মূল সার্কুলেশন পাইপ লাইনের ওয়েল্ডিং-এর কাজ শুরু হবে”।
জানা যায়, রূপপুর কেন্দ্রের জন্য বাষ্প জেনারেটরগুলো তৈরি করেছে রাশিয়ার ভলগাদন্সকের একটি প্রতিষ্ঠান এটোমাস (এইএমটেকনোলজিসের একটি শাখা)। প্রতিটি বাষ্প জেনারেটর প্রায় ১৪ মিটার দীর্ঘ, প্রস্থে ৪ মিটারেরও বেশি এবং এর ওজন ৩৫০ টন। রিয়্যাক্টর প্ল্যান্ট সার্কুলেশন সার্কিটে বাষ্প জেনারেটর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রিয়্যাক্টর কোর-এ সৃষ্ট তাপ সেকেন্ডারি সার্কিটে ট্রান্সফারের জন্য এই বাষ্প জেনারেটর মূল ভূমিকা পালন করে। সেকেন্ডারি সার্কিটে বাষ্পের সাহায্যে টার্বাইন ঘোরে এবং এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করেন।
প্রকল্পের মূল কাজ এগিয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এই প্রকল্পে এখন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক-প্রকৌশলী কাজ করছেন। প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের কাজ প্রায় শেষ। এদিকে দ্বিতীয় ইউনিটের প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ভিভিআর-প্রযুক্তির রিয়্যাক্টরের দুটি ইউনিট তৈরি হবে। আগামী ২০২৩ সালে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবার কথা রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটের আয়ুষ্কাল ৬০ বছর ধরা হয়েছে, যা আরও ২০ বছর বাড়ানোর সুযোগ থাকবে।