দেশে প্রতি বছর জন্ম নেওয়া ৩০ লাখ শিশুর মধ্যে চার লাখই অপরিণত। এ সংখ্যা বছরে জন্ম নেওয়া মোট শিশুর সাড়ে ১২ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া জন্মের ২০-৩০ দিনের মধ্যে চক্ষু পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা না করালে শিশু পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সেমিনার হলে রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচিউরিটি (আরওপি) বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের উদ্যোগে ও অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় সেমিনারটি আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।
তিনি বলেন, ‘আরওপি এমন একটি রোগ, যা অপরিণত নবজাতক শিশুদের রেটিনায় রক্তক্ষরণ ও ক্ষত সৃষ্টি করে। এর পরিণাম হয় আজীবনের জন্য অন্ধত্ব। তবে অপরিণত নবজাতক শিশুদের জন্মের এক মাসের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এবং কম খরচেই এই অন্ধত্ব মোকাবিলা সম্ভব।’
স্বাগত বক্তব্যে অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রোগ্রাম পরিচালক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ১৯৮২ সালে যাত্রা শুরুর পর বাংলাদেশে ১৯৮৫ সাল থেকে কাজ করছে। অরবিস ২০১২ সালে ঢাকায় একটি হাসপাতালে আরওপি প্রকল্পের মাধ্যমে পরীক্ষা ও চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করে। সব জেলায় আরওপি চিকিৎসাসেবা পৌঁছানো প্রয়োজন। আরওপি সেবা প্রদানে কয়েকটি জেলাতে মানবসম্পদ তৈরি করেছি। আমরা শিশুদের জন্য একটি সাজানো বাগান করতে চাই এবং এই বাগান তাদের দেখতে দিতে হবে।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চমেক হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. উৎপল সেন। তিনি বলেন, ‘আরওপি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য জনসচেতনতা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং দক্ষ জনশক্তি ও নবজাতকের মানসম্মত সেবায় খুব সীমিত সংখ্যক হাসপাতালে আছে। আরওপিজনিত অন্ধত্ব দূর করতে হলে সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই। এভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দৃষ্টি সুরক্ষা করার মাধ্যমে আমরা তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি উৎপাদনশীল জীবন উপহার দিতে পারি।’
সেমিনারে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- চক্ষু হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট (রেটিনা) ডা. সাহেলা শারমিন। হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. তনুজা তানজিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন- চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শর্মিলা বড়ুয়া, পেডিয়েট্রিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ, ডা. রাশেদা সামাদ, ডা. এস. এম তারেক প্রমুখ।