X
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
৩০ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাবিতে নেই কোনও বিশেষ আয়োজন

ঢাবি প্রতিনিধি
১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:০৯আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:০৯

ঘটনাবহুল বছর ২০২১।  এ বছর উদযাপিত হচ্ছে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষাকী,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আর  এ বছরই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেরও সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে প্রাণ হারান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৯ জন শিক্ষক। তবে এই শিক্ষকদের শহীদ হওয়ার সুবর্ণজয়ন্তীতে তাদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই কোনও বিশেষ আয়োজন। 

প্রতিবছরের মতো এবারও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে কর্মসূচি। তবে দিবসটির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নেই কোনও বিশেষ আয়োজন।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাবির জনসংযোগ দফতরে থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ছয়টায় উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, সকাল ৭টা ৫মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

সকাল ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনে প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা, বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত এবং শান্তি কামনায় দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে শহীদ শিক্ষকদের স্মরণে যা করা যেতো

দিবসটি উপলক্ষে কী কী করা যেতো জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন বলেন, ‘উনাদের (শহীদ বুদ্ধিজীবী) স্মরণে সভা হতে পারতো হয়তো হয়েছে, তবে সেটা খুবই সামান্য। তাদেরকে উৎসর্গ করে তিন দিন বা পাঁচ দিনব্যাপী সেমিনার হতে পারতো। সেখানে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কেমন হবে— এই ধরনের নানান বিষয়ে সেমিনার হওয়া উচিত ছিল। এর পাশাপাশি মুনির চৌধুরীর নাটক চিন্তা নিয়ে কথা হতে পারতো,গোবিন্দ চন্দ্র দেব স্যারের দর্শন নিয়ে কথা হতে পারতো। আমরা কেউই জানি না উনার দর্শনটা কী ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘উনারা (শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষকরা) কী করেছেন আমরা অনেকে জানি না,এখনকার শিক্ষকরা কেউই জানে না। তাদের জীবন দর্শন নিয়ে সেমিনার হতে পারতো, পুস্তিকা হতে পারতো।  ফটো প্রদর্শনী হতে পারতো। তাদের আত্মীয়-স্বজন এবং তাদের সময়ের যে শিক্ষকরা বেঁচে আছেন, তাদেরকে দিয়ে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা হতে পারতো। তাদেরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য স্যুভেনির বা বই প্রকাশ করা যেতো।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান বলেন,‘যে সব শিক্ষক শহীদ হয়েছেন তাদের কাজগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারতো। তাদের কাজগুলো পরবর্তী প্রজন্ম জানে না, আমরাও যে খুব বেশি জানি তা না। উনাদের জীবনদর্শনকে সামনে আনা, উনাদের নিয়ে গবেষণা, পিএইচডি থিসিস,এমফিল থিসিস করা যেতো।’

করা হয়নি কেন?

যেসব কাজ করা যেতো তা করা হয়নি কেন, জানতে চাইলে অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান বলেন, ‘কেন করা হয়নি এটি একটি ব্যাপক রাজনৈতিক প্রশ্ন। শিক্ষক সমিতি একটা রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে।  তা এখন আর পেশাজীবী সংগঠন নেই। বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় আমরা দেখি— রাজনৈতিক দিক থেকে তারা অনেকে ভিন্নমতের মানুষ ছিলেন এবং ভিন্নমতের মানুষই বেশি। যার ফলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা আছে। ভিন্নমতকে আমরা সেলিব্রেট করি না, কিন্তু আসলে ভিন্নমতকে উদযাপন করা জরুরি। এই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদেরকে সেই সুযোগটি করে দেয়, তা আমরা কখনও ব্যাবহার করি না।’

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রাম থাকে।  তাই দিবসটি নিয়ে ওভাবে কোনও আয়োজন নেই।’

ঢাবির শহীদ শিক্ষকরা

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি আর্মি ও তাদের সহযোগীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে তাদের মধ্যে ছিলেন— গিয়াসউদ্দিন আহমেদ,ড. এ. এন. এম. মনিরুজ্জামান,ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, এ. এন. মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী,ড. আবুল খায়ের,ড. সিরাজুল হক খান,রাশীদুল হাসান,আনোয়ার পাশা,ড. জি. সি. দেব,ড. ফজলুর রহমান,ড. ফয়জুল মহি,আব্দুল মুকতাদির,শরাফৎ আলী,সাদত আলী,এ. আর. খান খাদিম,সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য,অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য,মোহাম্মদ সাদেক।

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
রিজার্ভ ডে সংকট: দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফাইনাল!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপরিজার্ভ ডে সংকট: দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফাইনাল!
সংকটে গণমাধ্যম: চ্যালেঞ্জ জিততে লড়তে হবে
সংকটে গণমাধ্যম: চ্যালেঞ্জ জিততে লড়তে হবে
‘ডিজিটাল’ থেকে ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশের পথে
‘ডিজিটাল’ থেকে ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশের পথে
সর্বাধিক পঠিত
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
আমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তিআমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?