X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুধু ট্রেড লাইসেন্সেই চলছে প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি

আমানুর রহমান রনি
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১২:৫০আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৫:৩৯
image

প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি

শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে দেশের সাত শতাধিক প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি চলছে। এ সব কোম্পানির জন্য কোনও নীতিমালা না থাকায় কোনও জবাবদিহিতা নেই। অভিযোগ রয়েছে,  রুগ্ন ও বয়স্ক লোকদের কম বেতন দিয়ে এসব কোম্পানিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, যাদের তেমন নেই কোনও প্রশিক্ষণ, তারাই মানুষের যানমালের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এতে জননিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে। তবে, এই খাতটি অত্যন্ত বড়, আরও বড় হচ্ছে। তাই এই খাতকে একটি নীতিমালার মধ্যে রাখা উচিত।

রাজধানীর পাড়া, মহল্লা, শপিং মল, হাসপাতাল, বাজার ও স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন প্রাভেট সিকিউরিটি কোম্পানির সদস্যরা। নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে মানুষ এখন প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। এর সুযোগ নিচ্ছে শতশত প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি। তাদের সেবা ও নিরাপত্তা দেওয়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবে এসব কোম্পানির মধ্যে মোটামুটি ১৫টির বেশি কোম্পানির গ্রহণযোগ্যতা বেশি। এসব কোম্পানির নিরাপত্তাবাহিনী দেশের নামকরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর নিরাপত্তা দিচ্ছেন। বর্তমানে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তায় কাজ করছে জি-৪-এস নামে একটি কোম্পানি। রাজধানীর বারিধারায় অবস্থিত এই কোম্পানি কেবল বাংলাদেশে নয়, কাজ করছে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও। এই কোম্পানির নিরাপত্তাকর্মীরা বিদেশি দূতাবাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যেমন কাজ করছেন, তেমনি কাজ করছেন হাউজ কিপিংয়ে ক্ষেত্রেও। এ ছাড়া, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, বিমানবন্দরে ভিআইপিদের অভ্যর্থনা ও হাসপাতালে নিরাপত্তার মতো ভিন্ন ভিন্ন কাজেও তাদের দেখা যাচ্ছে।

প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি

‘বেসরকারি নিরাপত্তা বিধিমালা, ২০০৭’—এসব প্রাইভেট কোম্পানির বাধার মুখে বাস্তবায়িত হতে পারেনি। তাই নিয়মনীতি ছাড়াই চলেছে প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো। ওই বিধিমালায় উল্লেখ আছে, শুধু পোশাকে নির্দিষ্ট সিকিউরিটি কোম্পানির উজ্জ্বল মনোগ্রাম বা লোগো ব্যবহৃত হবে। মাথার টুপিতে কোনও মনোগ্রাম থাকতে পারবে না। শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো সরকার নির্ধারিত পোশাক ব্যবহার করবে। যা কোনও সরকারি বাহিনীর পোশাকের মতো হতে পারবে না। এমনকি সরকারি বাহিনীর পোশাকের সাদৃশ্যপূর্ণও হতে পারবে না। কোনও সরকারি বাহিনীর মতো র‌্যাঙ্ক বা র‌্যাঙ্কব্যাজ ব্যবহার করতে পারবে না। পোশাকে ও বাহিনীর সদস্যের বুকে লাইসেন্সিং প্রতিষ্ঠানের নাম, মনোগ্রাম স্থায়ী কালি বা সুতা দিয়ে লিখতে হবে। যা সহজেই দেখা যায়। কোনও প্রকার মনোগ্রাম ছাড়া সিকিউরিটি কোম্পানির সদস্যরা টুপি ব্যবহার করতে পারবে। তবে টুপির রং কোনও সরকারি বাহিনীর মতো হতে পারবে না। কোনও সিকিউরিটি কোম্পানির পোশাক সরকারি বাহিনীর পোশাকের মতো বা সাদৃশ্যপূর্ণ হলে তা বেআইনি। তা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিধি মোতাবেক ওইসব সিকিউরিটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কোম্পানিতে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ বিধিমালা মানতে হবে।

এদিকে, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর আন্দোলনের মুখে তখনকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিন বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হননি। এরপর তা আর বাস্তবায়িতও হয়নি।

প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি

বাংলাদেশ সিকিউরিটি সার্ভিসেস কোম্পানিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএসসিওএ) মহাসচিব মো. শাহ আলম সরকার বলেন, দেশে বর্তমানে সাত শতাধিক প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি রয়েছে। সিকিউরিটি কোম্পানি খুলতে তেমন কিছুই লাগে না। শুধু সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স হলেই হয়। যদি কেউ লিমিটেড কোম্পানি করতে চান, তাহলে জয়েন্ট স্টক কোম্পানির অনুমোদন নেন। তবে, বেশির ভাগ সিকিউরিটি কোম্পানি চলছে ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে।  এদিকে, কোনও কোম্পানি অস্ত্রের অনুমোদন নিতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও স্বররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে।

প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি

পোশাক, র‌্যাঙ্কব্যাজ লাগানোর বিষয় শাহ আলম সরকার বলেন, ২০০৭ সালের প্রস্তাবিত ওই বিধিমালাটি কার্যকর নয়। তাই এটি কেউ মানে না। কোম্পানিতে অনেক সদস্য থাকেন, তাদের চেনার জন্য র‌্যঙ্কব্যাজ থাকে। পদবি অনুযায়ী র‌্যাঙ্কব্যাজ দিয়ে থাকে। কোম্পানি স্বার্থে এসব করা হয়ে থাকে। এছাড়া আপনি একজন গার্ড নেবেন, তাকে যদি গার্ডের মতো না দেখায়, তাহলে দেখতে কেমন লাগবে? তাই এসব পরানো হয়। তিনি বলেন, আমরা এখন কোনও বিধিমালাই মেনে চলি না। আমাদের কোনও নীতিমালা নেই। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেই কোম্পানিগুলো চলে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, এ বিষয়ে কমিটি করা আছে। কমিটির সদস্যরা কাজ করছেন।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম।

/এমএনএইচ/

আপ-এসটি

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক
১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক
থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চীনকে যা করতে হবে
পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চীনকে যা করতে হবে
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী মিডফিল্ডারকে নিয়ে দুঃসংবাদ
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী মিডফিল্ডারকে নিয়ে দুঃসংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ