বাংলাদেশের জনগণকে স্যালুট জানাই: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের মানুষের সাহস ও আত্মমর্যাদার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার পর এক বিদেশি সাংবাদিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, বাংলাদেশের কোনও সম্পদ নেই, ‘আপনি কীভাবে দেশ গড়ে তুলবেন?’ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার মাটি আছে, মানুষ আছে, তাই দিয়ে দেশ গড়বো।’ সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের অর্থনীতি সচল আছে। অনেক প্রকল্প নিয়েছি। পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে যায়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতি করোনা মোকাবিলা করেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ মোকাবিলা করেও গতিশীল আছে। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে— বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ। জনগণ সাহসের ঠিকানা। বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট জানাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে বলেছিল, পদ্মা সেতু সম্ভব না। বিরোধিতা করেছিল, ষড়যন্ত্র করেছিল। আমি মনে করি, তাদের চিন্তার ও আত্মবিশ্বাসের দৈন্যতা আছে। তবে আজকের পরে তাদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলে বিশ্বাস করি— না, বাংলাদেশ পারে।’

এর আগে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সমাবেশস্থলে পৌঁছান তিনি। সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরান বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঞ্চের সামনে উপস্থিত রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, মাহবুব-উল হক হানিফ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন, ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, দেশের দীর্ঘতম এই সেতুর দাফতরিক নাম ‘পদ্মা সেতু’। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু রাজধানীর সঙ্গে মেলবন্ধন সৃষ্টি করলো দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলাকে। দ্বিতল দেশের দীর্ঘতম এই সেতুতে গাড়ি ও রেল দুটোই চলবে। সেতু নির্মিত হয়েছে কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে। সেতুতে থাকছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ পরিবহন সুবিধা। মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া, মাদারীপুর জেলার শিবচর এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরার সীমান্তবেষ্টিত পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক রয়েছে ১২ দশমিক ১২ কিলোমিটার।

১৯৯৯ সালে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর। এরপর করোনা মহামারিতেও একদিনের জন্য কাজ থেমে থাকেনি; দীর্ঘ সাত বছরে দিন-রাত হাজারো মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাস্তবে রূপ নিয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।