পদ্মা সেতু পার হতে মোটরসাইকেলে ভাড়া ৪০০ টাকা

পদ্মা সেতু দিয়ে রবিবার ভোর ৬টা থেকে উন্মুক্ত করা হয় গাড়ি চলাচল। ভোর থেকেই যানবাহনের চাপ ছিল পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে। বাস-ট্রাকের পাশাপাশি অতিরিক্ত মোটরসাইকেলের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। রবিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় অবস্থান করে দেখা যায়, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে হাজারো মোটরসাইকেল পদ্মা সেতুর দিকে যাচ্ছে। অনেকে সেতুর ওপরে মোটরসাইকেল ও গাড়ি রেখে দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। অনেক চালককে নির্দিষ্ট গতির চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালাতে দেখা যায়। অনেকে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন।

সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার কিছু দূরে মোটরসাইকেল নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় অনেক চালককে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেকেই মোটরসাইকেলে সেতু পার হচ্ছেন। টোল পরিশোধের সময় কথা হয় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের আরোহীদের সঙ্গে। তারা জানান, সেতু পার হতে মোটরসাইকেলে জনপ্রতি দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা এবং দুজন যাত্রী ছাড়া মোটরসাইকেলও ছাড়ছেন না তারা। একা যেতে চাইলে ভাড়া দিতে হচ্ছে ৪০০ টাকা।

ফরিদপুরের তালমা থেকে আসা শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘অনেকদিন ধরে ভাবছি সেতু উদ্বোধন হলে আসবো। মনকে মানাতে পারছিলাম না কিছুতেই। তাই ভেঙে ভেঙে সেতু দেখতে এলাম। সেতুটি কাছ থেকে দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেতুতে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এখানে একজন মোটরসাইকেল চালককে দেখতে পেলাম। তার সঙ্গে ৪০০ টাকার চুক্তিতে মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।’

শুধু শাহ আলমই নন। পদ্মা সেতু দেখতে এসে এভাবে অনেকেই ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু ঘুরে আবার জাজিরা প্রান্তে আসছেন।

মাদারীপুরের রাজৈর থেকে আসা কলেজছাত্র খালিদ বলেন, ‘৮০ কিলোমিটার দূর থেকে এসেছি। সেতুটি দূর থেকে দেখে মন ভরছে না। তাই এই মোটরসাইকেলে উঠলাম। ৪০০ টাকা দিতে হবে, ওপার পর্যন্ত নিয়ে যাবে।’

মসিউর রহমান নামে একজন মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘টোল ভাড়া ১০০ টাকা, বাকি ১০০ টাকা মোটরসাইকেলের ভাড়া। আবার বেশির ভাগ সময় ফিরে আসতে হবে খালি। এ ছাড়া তেল খরচ তো আছেই। সবকিছু হিসাব করে দুই জন যাত্রী নেওয়া হচ্ছে এবং জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা।’

শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ থেকে সেতু দেখতে আসা সীমা আক্তার বলেন, ‘বাড়ির কাছে সেতু। তাই প্রথম দিনই আসলাম দেখতে। ভেবেছিলাম সেতুর ওপরে যাওয়া যাবে। পায়ে হেঁটে এবং কাছে গিয়ে দেখা যাবে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি, সেতুর আশপাশে ভিড়তে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা ‌বাহিনী। তাই মোটরসাইকেলে উঠলাম।’