জয়পুরহাট থেকে পদ্মা সেতু দেখতে এলেন বৃদ্ধ মোজাহার আলী

জয়পুরহাট থেকে পদ্মা সেতু দেখতে এসেছেন ৭২ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাহার আলী সরকার। রবিবার বিকাল ৪টার দিকে জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজায় তাকে দেখা যায়। লুঙ্গি ও শার্ট পরিহিত অবস্থায় দুই হাতে দুটি ব্যাগ হাতে ঘুরছেন টোল এলাকায়। 

এ সময় তিনি জানান, তার বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার সরাইল গ্রামে। বাবা মৃত নুর মোহাম্মদ সরকার। অনেক আগেই তিনি মারা গেছেন। বর্তমানে দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা মোজাহার আলী।

১৯৬৭ সালে এসএসসি পাশের পর ভর্তি হন আইএসসিতে স্থানীয় একটি কলেজে। সেখানে আইএসসির দ্বিতীয় বর্ষে থাকা অবস্থায় যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। পেয়েছেন সনদও। পরে বিএ পাস করেন। পরে পাঁচবিবি এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ভিনধারা বালিকা বিদ্যালয় নামে একটি উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ১৯৯১ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজায় দেখা যায় ৭২ বছর বয়সী মোজাহার আলীকে

মোজাহার আলী সরকার বলেন, ‘দুপুরে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এসেছি। পদ্মা সেতু ঘুরে দেখার ইচ্ছা ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধায় বিআরটিসির এক বাসে চড়ে এসেছি সেতুর জাজিরা প্রান্তে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগেই জেনেছিলাম শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। পরের দিন সেতুতে উঠতে রওনা দিলাম। অনেক লোক ওখানে আসলো। পুলিশের বাধায় সবাই ফিরে গেলো। আমি রয়ে গেলাম। আমার তো ইচ্ছে হেঁটে সেতুতে উঠবো। তিন-চারবার অনুরোধ করলাম, পুলিশ ছাড়লো না। পরে ওখান থেকে চলে আসার জন্য একশ’ বাসকে অনুরোধ করলাম। কেউ আমাকে নিলোনা। পরে একটি বিআরটিসি বাসকে অনুরোধ করলে তারা আমাকে এখানে নিয়ে আসে।’

আগে থেকেই সকারের নির্দেশনা ছিল- কাউকে সেতুতে উঠে হাঁটাহাঁটির সুযোগ দেওয়া হবে না বা হেঁটেও এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া যাবে না। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে এসেও পদ্মা সেতু না দেখেই ফিরতে হয়েছে অনেককে।

উল্লেখ্য, শনিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারিত টোল দিয়ে ১১টা ৫৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে সেতু দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর শরিয়তপুরের জাজিরার অভিমুখে রওনা করে। সেখান থেকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বাংলাবাজার ঘাটের জনসভাস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন।