বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ

আড়াই বিঘা জমির ওপর যে মসজিদ (ভিডিও)

বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে সিরাজগঞ্জের আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ।

সিরাজগঞ্জ-এনায়েতপুর সড়কের বেলকুচি পৌরসদরে গেলেই চোখ আটকে যাবে দৃষ্টিনন্দন এক স্থাপনায়। আর তা হলো আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ। মসজিদ ভবনটি দেখামাত্রই মনে সৃষ্টি ও স্রষ্টার একাত্ম হওয়ার এক শান্তিপূর্ণ স্থান।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মুকুন্দগাতী গ্রামের শিল্পপতি মোহাম্মদ আলী সরকার বেলকুচি পৌরভবন সংলগ্ন দক্ষিণে আড়াই বিঘা জমির ওপর তার ছেলে আল-আমান ও মা বাহেলা খাতুনের নামে মসজিদ কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে নয়নাভিরাম এ মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি। নির্মাণে সময় লেগেছে চার বছর। আগস্টে তিনি মারা গেলে পরিবারের চেষ্টায় মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয়।

মসজিদে ছাই রঙের বিশালাকৃতির মনোরম একটি গম্বুজ রয়েছে। মেঝেতে সাদা রঙের ঝকঝকে টাইলস এবং পিলারগুলো মার্বেল পাথরে জড়ানো। তৃতীয় তলায় গম্বুজে সঙ্গে লাগোয়া বেশ কয়েকটি নজরকাড়া ঝাড়বাতি লাগানো হয়েছে। দুই পাশে নির্মাণাধীন ১১তলার সমান (১১০ ফুট) উচ্চতার মিনার থেকে আজানের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দূর থেকেই মসজিদের গম্বুজ ও নির্মাণাধীন মিনার দুটি নজর কাড়ে।

চারপাশে সাদা রঙের পিলার, সুউচ্চ জানালাও সাদা টাইলস। মসজিদ চত্বরে পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে সবুজ ঘাস। চার পাশে রঙবেরঙের লাইটিংয়ে রাতের বেলা এক অন্যরকম আবহের সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে পরিবেশটাই মনে করিয়ে দেবে এক আধ্যাত্মিক শান্তির কথা।

ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের থাকার জন্য মসজিদের পাশে ১০ তলা ভবনে আছে নিজস্ব কোয়ার্টার। আছে পাঠাগার ও আধুনিক শৌচাগার। সেই সঙ্গে প্রবেশ পথের দুই সিঁড়ির পাশে কাচে ঘেরা অটো ফিল্টার করা পানি দিয়ে আছে ওজুর ব্যবস্থা।

এ ছাড়া ইতালি ও ভারত থেকে আনা উন্নতমানের মার্বেল পাথরসহ কাঠের কারুকাজে মসজিদের বিভিন্ন স্থানকে আকর্ষণীয় করতে নান্দনিক নকশার কাজ করা হয়েছে। বিশেষ করে মসজিদের সামনের সুউচ্চ দুটি সিঁড়ি, নান্দনিক প্রবেশপথ ও প্রধান ফটক যে কারও দৃষ্টি কাড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মসজিদটির নির্মাণকারী প্রয়াত আলহাজ মোহাম্মদ আলী সরকারের পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘আল্লাহর ঘর নির্মাণে আমরা কাজ করেছি। নিজেদের প্রচার চাই না। মানুষ শান্তিতে নামাজ পড়তে পারলেই আমাদের শান্তি। তবে এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোক্তা আলহাজ মোহাম্মদ আলী সরকার বেঁচে থাকলে তিনি এখানে নামাজ আদায় করতে পারতেন। সেটা দেখতে পেলে বেশি ভালো লাগতো।’