গত ১৫ মে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি প্রধানমন্ত্রী দফতরে পাঠনো হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না দিয়েই প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে সফরে গেছেন।
এদিকে দেশের সুপারমার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা প্যাকেজ ভ্যাটের এই সিস্টেমকে বৈষম্যমূলক আচরণ ও হয়রানি বলে অভিহিত করছে। তারা বলছেন, একজন সুপারমার্কেটের মালিক যে স্পেস নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে বছরে লাখ লাখ টাকা ভ্যাট দেন, অন্য ব্যবসায়ী সেই পরিমানের স্পেসে ব্যবসা পরিচালনা করে প্যাকেজ ভ্যাটের আওতায় বছরে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা ভ্যাট দেন। শুধু তাই নয়, সুপারমার্কেটের মালিকরা ইসিআর (ইলেক্টিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার) ম্যানটেইন করেন। অন্যদিকে ওই ব্যবসায়ীরা তা করেন না। কাজেই কারও প্রতি বৈষম্য নয়, দেশের সব ব্যবসায়ীর জন্য একই নীতি নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করেন তারা।
জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভ্যাট নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। সরকার বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেবে। ভ্যাট সম্পর্কে সরকারের সিদ্ধান্ত অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলবেন। সরকারের প্রতি আস্থা রাখুন। সরকার এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না, যাতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন বা কেউ অখুশি হন।
এ প্রসঙ্গে জাকার্তা যাওয়ার আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।
এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, নতুন ভ্যাট আইনের সংশোধন নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছি। তাই এবার তা সংশোধন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সবুজ সংকেতও পাওয়া গেছে। তিনি জানিয়েছেন, মোট ৭টি সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। এই ৭টি সংশোধনী দিলেই চলবে আমাদের।
প্রসঙ্গত, নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন সংশোধনের জন্য তৃতীয়বারের মতো গত রবিবার (১৫ মে) এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই চিঠির সঙ্গে বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাব যুক্ত করে এফবিসিসিআই তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন চেয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মূসক আইন বিষয়ে তিন দফা চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।
গত ২৪ এপ্রিলে পাঠানো প্রথম চিঠিতে মূসক আইনের সংশোধনী চাওয়া হয়েছিল। পরের চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, নতুন চিঠিতে এফবিসিসিআই সব পর্যায়ে কর মুক্তির সীমা ২৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৬ লাখ টাকা করতে মূসক আইনের ২(৪৮) ধারা এবং ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা লেনদেন পর্যন্ত ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর আরোপের জন্য ২(৫৭) ধারার সংশোধন চেয়েছে। এ দুটি ক্ষেত্রে ‘উল্লিখিত টাকার সীমা’ শব্দগুলো যুক্ত করলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
অনাদায়ী করের জন্য করদাতার সব আত্মীয়কে দায়ী করার বিষয়টি বাতিল করার দাবি করা হয়েছে এফবিসিসিআইয়ের প্রস্তাবে। এ জন্য ২(৯৭) ধারার ‘ক’ উপধারা থেকে ‘ব্যক্তির কোনও আত্মীয়’ কথাটি বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
/এমএনএইচ/আপ- এপিএইচ/