বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধির ফলে এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তিভুক্ত (আপটা) দেশগুলোর বাণিজ্য অনেক বাড়বে, বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। শুক্রবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আপটার ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে পণ্য বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি সেবাখাত, বিনিয়োগ এবং ট্রেড ফেসিলিটেশন বিষয়ে ২০০৯ সালে স্বাক্ষরিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি দ্রুত কার্যকর করা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী চিন্তা ও যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জিডিপি অর্জন ৭ দশমিক ১১ ভাগ, মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বিশ্বের একটি মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বাংলাদেশ।’
এছাড়া, এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১৪ থেকে ১০০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ২ হাজার ৭৯৬টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৯৬১টি পণ্যে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৫৮৫টি পণ্যে ৫ থেকে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৭৫টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ, লাওস ৯৯৯টি পণ্যে ২০ থেকে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ, এবং মঙ্গোলিয়া ৩৩৩টি পণ্যে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দিবে। (আপটা সদস্য হিসেবে মঙ্গলিয়ার অন্তর্ভুক্তি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে)। এর ফলে বাংলাদেশ সর্বাধিক বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে এশিয়া প্যান প্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বপ্রথম প্রাধিকারযোগ্য বা প্রিফেনশিয়াল বাণিজ্য চুক্তি (ব্যাংকক এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাংকক এগ্রিমেন্ট পুনর্গঠন করে আপটা স্বাক্ষরিত হয়। আপটা মিনিস্টেরিয়াল কাউিন্সিলের মাধ্যমে শুল্কসুবিধাসহ চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আগামী ১ জুলাই তারিখ নির্ধারন করা হয়। চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় বিগত প্রায় ৭ বছর নেগোসিয়েশনের পর সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। সভার সভাপতি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আপটার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অভিনন্দন জানান।
সভায় শ্রীলংকার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী রিশাদ বাথিউডেন, লাওসের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী খিম্মানি ফলসিন, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থপ্রতিমন্ত্রী সেং মোক চোই, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিং ফুকুই, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাগওয়ান্ট সিংবিশনই এবং মঙ্গোলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত টুগসবিলগুন তুমুর্কহুলেজ নিজেদের দেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং আপটা’র টেরিফ কনসেশন, নন-টেরিফ মেজার্স ও রুলস অফ অরিজিন সংক্রান্ত ওয়েবপোর্টাল উদ্বোধন করেন।
/এসআই/এমও/