প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৮ শতাংশ হওয়ার আশা অর্থমন্ত্রীর

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতআগামী দুই বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৮ শতাংশ হবে, বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা জানান।
গত দেড় দশকে প্রবৃদ্ধি উল্লেখ্যযোগ্য হারে বেড়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত দেড় দশকে প্রবৃদ্ধি ৬ এর ঘরেই আবদ্ধ ছিল। গত অর্থবছরে সেটা ছয়ের বৃত্ত ভেঙে ৭ এর ঘরে এসেছে। আশা রাখি আগামী দু’বছরে বিনিয়োগও দুই শতাংশ বেড়ে ৩২ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। এখন যা সাড়ে ২৯ শতাংশ রয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন পৃথিবীজুড়ে মন্দা ছিল। সেই মন্দার সময়েই সরকার সাফল্যের সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছে। এই ৮ বছরে রফতানি প্রবৃদ্ধি খুব ভালো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাজারে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। দেশের মধ্যে অতি দারিদ্র্যের হার কমেছে।’
২০১৬ সালকে উত্তম বছর হিসাবে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, ‘তখন কোনও জ্বালাও-পোড়াও ছিল না, কোনও সহিংসতা ছিল না। তাই কোনও কাজও বন্ধ ছিল না। আগামী বছরগুলোয় কাজ যদি বন্ধ না থাকে তাহলে প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৫ বছর পার হলেও উন্নয়ন হয়েছে মূলত ৩০ বছরে। এর বাইরে বাংলাদেশকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের পর থেকে পরবর্তী ১৬ বছর অর্থনীতি একদম স্থবির ছিল।’ তারপরও ৩০ বছরে বাংলাদেশের যে সাফল্য তাও অনেক বলে জানান মন্ত্রী।
সাধারণত দেখা যায়, কোনও দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়লে সেখানে বৈষম্য বাড়ে, কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা হয়নি বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু বৈষম্য বাড়েনি। বৈষম্য যাতে না বাড়ে সেজন্য সরকার বিশেষ কৌশল গ্রহণ করেছিলে। আর সেই কৌশল হলো সামাজিক নিরপত্তা খাতে সরকার বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বর্তমানে আর্থিক সেবা মানুষের কাছাকাছি চলে এসেছে। সারা দেশে উন্নয়ন হচ্ছে, গ্রামে গেলে দেখতে পাওয়া যায় সেখানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কোনও কুঁড়ে ঘর আর সেখানে দেখা যায় না। তবে গ্রাম আর শহরের মধ্যে একটা বৈষম্য আছে। এটা অনেক পুরনো, যদিও এখন উত্তরণ ঘটছে। সবখানে সমাজ উন্নয়নে জোর দিচ্ছে।’
তবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ একটু ধীরে বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি খাতে যেভাবে বিনিয়োগ হয়েছে, বেসরকারি খাতে সেটা একটু ধীরে হয়েছে। তবে এখন যেহেতু স্থিতিশীলতা রয়েছে সেহেতু প্রবৃদ্ধি বেরসকারি খাতেও ধীরে ধীরে বাড়ছে।’ এসময় ‘ইউনিফর্ম ইকনোমি গ্রোথ’ বাড়ার কারণে টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
‘বর্তমান সরকারের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সভাপত্বিত করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ ব্যাংক শাখার সভাপতি হাবিবুর রহামান তালুকদার।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলমসহ প্রমুখ।

/জিএম/এমও/এপিএইচ/আপ-এমও/