২০২১ সালে রফতানি আয় ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদআওয়ামী লীগ এবার সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সময় রফতানি আয় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘গত অর্থ বছরে রফতানি আয় হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলমান রফতানি বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালে রফতানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’ বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় চারদিনব্যাপী বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সেপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)  আয়োজিত  ‘গার্মেন্টেক-২০১৭’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় দেশের রফতানি ৩ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। ওই মেয়াদ শেষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার সময় ছিল ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’

বাংলাদেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ খাত থেকে মোট রফতানির প্রায় ৮২ ভাগ আসে। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি এ অবস্থানে এসেছে। সামনে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং-এর প্রায় ৩০টি পণ্যের প্রয়োজন হয়। তৈরি পোশাক সেক্টরের জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একসময় এগুলো আমদানি করতে হতো। আজ দেশের শিল্পের চাহিদা মিটিয়ে এগুলো বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘২০০৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়। সে সময় অনেকেই মনে করেছিলেন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প আর এগুতে পারবে না। এ শিল্পে  শিশু শ্রম বন্ধের চ্যালেঞ্জ এসেছিল। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা পায় না, ১৬% শুল্ক দিয়ে রফতানি করে। এখন একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর সেখানে রফতানি হয়েছে ৬.২ বিলিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মোতাবেক  রফতানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার আইটি, ওষুধ, ফার্নিচার, জাহাজ নির্মাণ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য রফতানিতে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে কৃষিপণ্য রফতানিতে ২০%, চামড়াজাত পণ্যে ১৫%, জাহাজ রফতানিতে ১০%, ফার্নিচার রফতানিতে ১৫% নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।  ফলে রফতানি দ্রুত বাড়ছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ হবে। চলতি বছর শেষে প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫ ভাগ। ২০০৬ সালে দেশে অতিদরিদ্র মানুষ ছিল ২৪.২ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা কমে এসেছে ১২.৯ শতাংশে। ২০৩০ সালে তা ৩ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।’

অষ্টমবারের মতো আয়োজিত এ মেলায় ২৪টি দেশের ৪০০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০০ স্টল রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বিজিএপিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল কাদের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র  আনিসুল হক, এফবিসিসিআই-এর প্রথম সহ-সভাপতি  শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট সিদ্দিকুর রহমান, বিইডিএস-এর সিনিয়র রিসার্স ফেলো ড. নাজনিন আহমেদ, ভারতের এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনস (প্রা. লি.)-এর পরিচালক  নন্দ গোপাল কে।

/এসআই/এমএনএইচ/