গাড়ির পাসবই জমা দিতে ৬ মাস সময় চেয়েছে বিশ্বব্যাংক

 

বিশ্বব্যাংকশুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি ও গাড়ির পাসবই জমা দেবে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে লেখা চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ‘ইতোমধ্যেই অনেকগুলো বই জমা দেওয়া হয়েছে। তবে ভুলবশত হয়তো কিছু পাসবই জমা দেওয়া হয়নি। এগুলো এখন জমা দিয়ে দেওয়া হবে। কিছু বই হয়তো খুঁজতে হবে। এর জন্য সময় চেয়েছে বিশ্বব্যাংক।’ প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যেই পাসবইগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার দুপুরে আগারগাঁওস্থ বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের কনফারেন্স রুমে ইকনোমিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইআরএফ’-এর এক কর্মশালায় অংশ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান। তবে বিকেলে বাংলা ট্রিবিউনকে ই-মেইলে পাঠানো একটি লিখিত বিবৃতিও পাঠিয়েছেন চিমিয়াও ফান।

চিমিয়াও ফানের পক্ষে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের পাবলিক রিলেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান মেহেরিন এ মাহবুবের মেইল থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে—‘বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় ছেড়ে গেছেন, এমন বিদেশি কর্মকর্তাদের ৩৫টি পাসবুক শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তারা ঢাকা অফিস ছেড়ে যাওয়ার সময় পাসবুকগুলো শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগে জমা দিয়ে যাননি। এগুলোর মধ্যে এমন ৯টি পাসবুক রয়েছে, যেগুলোর কথা বিশ্বব্যাংকের কাছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের পাঠানো আজকের চিঠিতে উল্লেখ ছিল। আমরা যথাযথ অনুসন্ধান চালিয়ে বাকি পাসবুকগুলোয় থাকা নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।  এনবিআর কাছে ছয় মাস সময় চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাংক বাকি পাসবুকগুলো নবায়ন এবং ফেরত দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যে কোনও ধরনের অসঙ্গতি দূর করতে এনবিআর-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বিশ্বব্যাংক।’

উল্লেখ্য, শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ১৬টি গাড়িসহ পাসবুক তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এজন্য বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তারা এক নোটিশের মাধ্যমে সাতদিনের সময় বেঁধে দিয়েছে। বাংলা ট্রিবিউনকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।

জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বরাবর পাঠানো শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের নোটিশে ১৬টি গাড়ির নম্বর ও ব্র্যান্ডসহ বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে এগুলো কোথায় ও কী অবস্থায় আছে তা জানতে চেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। সাতদিনের মধ্যে তা না জানালে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

আইন অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় কেনা গাড়ি বিক্রি করা যায় না। কর্মকাল শেষে মিশন প্রধানকে গাড়ি বুঝিয়ে দিতে হয়। এরপর মিশন প্রধান শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগকে অবহিত করে গাড়ির ব্যাপারটি নিষ্পত্তি করে থাকেন। কিন্তু এ ১৬টি গাড়ির ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। সেক্ষেত্রে মিশন প্রধান দায় এড়াতে পারেন না বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগে মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।।

শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৩৪টি বিলাসবহুল গাড়ি আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:  আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু নির্বাচন করা: সিইসি

/এমএনএইচ/