‘ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন নীতিমালায় ঘাটতি আছে’

 

‘ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স অব ব্যাংক ২০১৬’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারাদেশের ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা পরিপালন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মুহাম্মদ রাজি হাসান। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন নীতিমালায় ঘাটতি রয়েছে। কিছু ব্যাংকের বোর্ড সভায় বোর্ডের বাইরের লোকজন উপস্থিত থাকছেন। বিষয়টি ব্যাংকের জন্য ভালো নয়।’ বৃহস্পতিবার মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স অব ব্যাংক ২০১৬’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর মোট শাখার তুলনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘দেশে এখন ব্যাংকগুলোর শাখা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারভিশনের জন্য লোকবল মাত্র ৮০০ জন। এ কারণে অনলাইন, অফলাইন ও অফসাইডসহ সব ধরনের সুপারভিশনে দুর্বলতা রয়েছে।’

আবু হেনা মুহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, ‘পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় যেকোনও ব্যাংকের একটি শাখা থেকে প্রধান কার্যালয় দুই হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেলেও অনেক সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে আসছে না।’

ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এই ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকে যার যা দায়িত্ব, তা পালন করতে হবে। একইসঙ্গে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে স্বার্থ রক্ষা হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় তৃতীয় চোখ হিসেবে কাজ করে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগ।’ 

কর্মশালায় তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে গেলে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন নীতিমালাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকেও এইসব নীতিমালা যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে।’

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যাংকের আইসিসিডি এখনও ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। এমন অবস্থার পরিবর্তন না হলে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংকারদের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এটি করতে না পারলে ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম রোধ করা কঠিন।’

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম প্রসাদ দাস প্রমুখ। মূল গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন ছিদ্দিকী।

/জিএম/এমএনএইচ/