বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, স্থানীয়রা ফোন করে আগুনের খবর দেয় ফায়ার সার্ভিসকে

বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের খবর স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রথম জানতে পারেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সাধারণ মানুষের টেলিফোন পেয়েই তারা আগুন নেভাতে এসেছিলেন বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ খান।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪ তলায় বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার মাসুদ বিশ্বাসের কক্ষের ১০-১৫ শতাংশ পুড়ে যায়। তখন স্থানীয়রাই প্রথম খবর দেয় ফায়ার সার্ভিসের কাছে।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তা কিংবা কেউই ফায়ার সার্ভিস অফিসে টেলিফোন করেননি। স্থানীয়রাই আমাদের খবর দেন। তারপর ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের প্রায় ৭০ জন কর্মী যান ঘটনাস্থলে।’

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালকের (ঢাকা) নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তারা পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা যেন জোরদার করা হয় সেজন্য তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হবে বলে জানান ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ খান।

এছাড়া মাঝে মধ্যে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কী করণীয় সে বিষয়ে ট্রায়াল যেন নিয়মিত করা হয় সেই সুপারিশও থাকবে কমিটির পক্ষ থেকে। পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপনে ফায়ার অ্যালার্মসহ দরকারি সরঞ্জামাদি রাখা এবং কর্মকর্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বরোপ করবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেছেন, ‘অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কেউই আমলে নেননি। এ ভবনের অবকাঠামো অগ্নিনির্বাপক উপযোগী নয়। তাছাড়া ফায়ার অ্যালার্মগুলোও অকার্যকর। যেগুলো আছে তা বাস্তবিক অর্থে কাজে লাগে না।’

ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ খান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যুতের লাইন অনেক পুরনো। এক লাইন থেকে অনেক লাইনের সংযোগ দেওয়া আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যালার্মিং সিস্টেম ভালো না। মাঝে মধ্যে ফলস অ্যালার্ম দেয়। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব কর্মী বাহিনীর মহড়া দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা জেনেছি, সেটাও নাকি নিয়মিত হয় না।’

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান জানান, শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি তখন জানান, কক্ষটির বেশকিছু ফাইল ও কাগজপত্র পুড়ে গেছে। তবে ফাইলগুলোতে কী ছিল, তা জানা যায়নি। এতে সার্ভারের কোনও ক্ষতি হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের ৭০ জন কর্মী। রাত ১০টা ৩৪ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণরূপে নেভানো হয়।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম

/জেএইচ/

আরও পড়ুন-

বাংলাদেশ ব্যাংকের জিডিতে যা আছে
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আগুনের ঘটনায় জিডি

রিজার্ভ চুরি ও ব্যাংক ভবনে আগুন: আলোচনায় ‘তিন দিনের ছুটি’!

বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন: আরও উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশ অর্থ প্রতিমন্ত্রীর

আগুন রহস্য উদঘাটনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩ সদস্যের কমিটি

পুড়ে গেছে বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের জিএম-এর কক্ষের ১০-১৫ ভাগ

বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আগুন: ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি

বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আগুন