করের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনার সুপারিশ ব্যবসায়ীদের

এফবিসিসিআইনতুন ভ্যাট আইনে করের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প কার্যালয়ে নতুন মূল্য সংযোজন ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ বাস্তবায়ন বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এ সুপারিশ করেন ব্যবসায়ীরা।
সভায় উল্লেখ করা হয়, সেবা খাতে ৩২-৩৩টির ওপর ভ্যাট রেখেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই খাতে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনতে এনবিআরকে সুপারিশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ। তিনি বলেন, ‘সেবা খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নিলে অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। তাই সেবা খাতে ভ্যাট কমাতে আলাদাভাবে চিন্তা করা দরকার।’
ভ্যাট অনলাইন সফল করতে ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘এ আইন আমাদের কাছে যত স্পষ্ট হবে তত সুবিধা। এ আইনের অস্পষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্ট হওয়া দরকার। টার্নওভার সীমা দেড় কোটি করা দরকার। বন্দরে আমরা যে এটিভি (অগ্রিম ব্যবসায়ী ভ্যাট) দিতাম তা ফেরত পেতাম না। নতুন আইনের ফলে তা ফেরত পাবো, এজন্য এনবিআরকে ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে আমাদের অনেক টাকা ফিরে আসবে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, ‘প্রথমবার দেখলাম ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করছে এনবিআর। এখন আর কারখানার পণ্য দাম ভ্যাট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনতে হবে না। এখন ব্যবসায়ীরাই পণ্য মূল্য ঘোষণা দেবেন। এর মাধ্যমে এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে। বিশ্বাস তৈরি হলেই ব্যবসায়ীরা এগিয়ে যেতে পারবে। আগে আমরা এদিক-ওদিক করে থাকলেও এনবিআর যেহেতু আমাদের বিশ্বাস করছেন তার মর্যাদা দেবো।’

এনবিআরের কাছে ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা দেনা আছে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বছরের পর বছর এই মামলা ক্যানসারের মতো ব্যবসায়ীদের মাথার ওপর বসে আছে। তাই এটার সমাধান হওয়ার দরকার। কিছু মওকুফ করে একটি নির্দিষ্ট সময় দিলে সমাধান হয়ে যাবে। কারণ ভ্যাট আইন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় সম্পূরক শুল্কের জায়গায় অন্য কিছু করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবার অনুরোধ রইলো। কারণ স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা না হলে এ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না।’

যদিও ১ টাকা ট্যাক্স দিতে ৩ টাকার হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ এফবিসিসিআই’র। তবে ভ্যাট অনলাইন চালু হলে এ থেকে পরিত্রাণ মিলবে বলে তাদের আশা।

সংগঠনটির সভাপতি বলেন, ‘৮ লাখের মধ্যে ৩০ হাজার ব্যবসায়ী ভ্যাট দেয় এটা শুনতে খারাপ এবং বলতে লজ্জা লাগে। আমরা চাই ৮ লাখ নিবন্ধন হলে ৮ লাখই ভ্যাট দেবে। সমস্যা কোথায়? সমস্যা সমাধানে ভ্যাট অনলাইন করা হয়েছে। এনবিআর থেকে বারবার বলা হচ্ছে, হয়রানি হবে না। কিন্তু মাঠে এ বার্তা পৌঁছাচ্ছে কই? মাঠে হয়রানির বিষয়ে এনবিআরকে সর্তক থাকতে হবে। কারণ ভ্যাট অনলাইন চালু হলে আমাদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের দেখা হবে না।’

সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘গত অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে ৪ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হবে। রাজস্ব ছাড়া এত টাকা কীভাবে আসবে? অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা এনে করের বোঝা না বাড়িয়ে উন্নয়নের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের জন্য সরকার এ আইন করেছে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন ও রেজাউল হাসান। 

/জিএম/জেএইচ/

আরও পড়ুন-
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধির জন্যই নতুন ভ্যাট আইন: আইনমন্ত্রী