বন্যায় কিছুটা খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে: অর্থমন্ত্রী

আবুল মাল আবদুল মুহিত (ফাইল ফটো)

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে, তবে এটা সাময়িক। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত আছি। দেশে খাদ্যের সংকট যাতে না হয়, সেজন্য চাল আমদানি করা হচ্ছে।’ বুধবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও প্রাণ-আরএফএল-এর সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বন্যার কারণে চালের দাম বেড়ে গেছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রীর ভাষ্য, ‘আমাদের দেশে চালের দাম বেশি। অবশ্য আর্ন্তজাতিক বাজারেও এখন চালের দাম বেশি। বন্যার কারণে দেশে যে বিপত্তি হচ্ছে, সেজন্য চাল আমদানি করতে  হচ্ছে অনেক। এতে অনেক ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। তবে দেশের মানুষের জন্য সরকার উচ্চ ব্যয়েই চাল আমদানি করবে।’

সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ের অনিয়ম ও খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় কষ্ট পান বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উন্নতজাতের গাভী পালন ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে প্রাণ ডেইরির চুক্তিবদ্ধ খামারিদের সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান, সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল মকবুল, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ,  প্রাণ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ফিন্যান্স) উজমা চৌধুরী এবং সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘দেশের কৃষি শিল্পের অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে সোনালী ব্যাংক ঋণ সহায়তা দিয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের দুগ্ধ শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে অপুষ্টি দূরীকরণসহ যুবক ও যুব মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।’

প্রাণ ডেইরির তালিকা অনুযায়ী তাদের চুক্তিবদ্ধ খামারিদের স্বল্প সুদে জামানতবিহীন ঋণ দেওয়া হবে বলে জানান সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী। তিনি বলেন, ‘একজন খামারিকে জামানতবিহীন ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। এছাড়া জামানতের বিপরীতে তিন লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। এ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা হবে তিন থেকে পাঁচ বছর।’

অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘প্রাণ-এর চুক্তিবদ্ধ খামারিদের গাভী ক্রয়, শেড স্থাপন, মিল্কিং মেশিন, চপার মেশিন, দুধবহনের অ্যালুমিনিয়াম ক্যানসহ খামার ব্যবস্থাপনার আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্যে এ ঋণ দেওয়া হবে।’

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও জানান— নাটোরের গুরুদাসপুর, পাবনার চাটমোহর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও বাঘাবাড়ী এবং রংপুরে অবস্থিত প্রাণ-এর পাঁচটি ডেইরি 'হাব'-এর অধীনে ১১ হাজারের বেশি রেজিস্টার্ড দুগ্ধ খামারি রয়েছেন। এসব খামারির কাছে প্রায় ৫৫ হাজার গবাদি পশু রয়েছে।

/জিএম/এপিএইচ/জেএইচ/