‘টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকে তহবিল গঠন জরুরি’

টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটা তহবিল গঠন করা জরুরি, বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘এক্সপ্লোরিং বেরির্য়াস অব সাসটেইনেবল ফিন্যান্স ইন ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর অ্যান্ড পলিসি প্রোপজিশনস টু রিমুভ দ্য বেরিয়ার’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে কর্মশালাইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘এই তহবিল গঠনের দায়িত্ব ব্যাংকগুলোর ওপর চাপিয়ে দিলে তা ভেস্তে যেতে পারে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটা কোর ফান্ড গঠন করতে পারে। যেখানে সরকারের বাজেট থেকে কোর ফান্ডে টাকা জমা হবে। এই ফান্ডে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো টাকা জমা করবে।’

শস্যবিমার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার তবে তা বাস্তবায়ন সহজসাধ্য নয় জানিয়ে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘কারণ এতে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে শস্যবিমা চালু করার কথা বলা হলেও তা আলোর মুখ দেখছে না। একই সঙ্গে সবুজ অর্থায়নের জন্য কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে না। প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার মাধ্যমে মানব সম্পদের উন্নয়ন করতে হবে।’

বিআইবিএম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক, প্রশিক্ষণ ড. শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি গবেষক দল কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে টেকসই অর্থায়নের সুফল পেতে নীতি নির্ধারকদের সমন্বিত উদ্যোগ এবং কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংকিং অ্যাসোসিয়েশন এ লক্ষ্যে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করলে দ্রুত এর সুফল পাওয়া যাবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কম সুদে বাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুনঃঅর্থায়নের জন্য ফান্ড গঠন করলে দ্রুত এ খাতে সফলতা আসবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ‘১৯৯৭ সালে গ্রিন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে টেকসই অর্থায়ন শুরু হয়। টেকসই অর্থায়নের দ্রুত সফলতার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ খাতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে, যা দূর করতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বেসরকারি পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখতে চায় না। ইদানিং সবক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটা অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে সবাইকে একই ছাতার নিচে আসতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইয়াছিন আলি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে আর্থিক শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে। তাই শুরু থেকেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং, স্কুল ব্যাংকিংসহ অন্যান্য বিষয়ে ধারণা দিতে হবে।’

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মনোজ কুমার বিশ্বাস।