৩ মাসের মধ্যেই ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা: কিউসি

 

বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী আজমালুল হক কিউসিসহ অন্যরাবাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনতে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি। তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি কোর্টে এই মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কিউসি বলেন, ‘আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে মামলা করতেই হবে। এক্ষেত্রে ফিলিপাইন সরকারের সঙ্গে যেন বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট না হয়, সে জন্য নিউ ইয়র্কে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও সুইফটের সঙ্গে কথা বলে মামলা করা হবে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের পরামর্শক দেবপ্রসাদ দেবনাথ প্রমুখ।

বুধবার এর আগে  ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও নিউ ইয়র্কের কোর্টে মামলা করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করবে। পক্ষে থাকবে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। আর আসামি করা হবে আরসিবিসিকে।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা এবং ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। এই ঘটনার প্রায় একমাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদেশ জানতে পারে। এ ঘটনা চেপে রাখতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। বড় ধরনের রদবদল করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষপর্যায়ে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং আইনে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ এনে ১৫ মার্চ (২০১৬) মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি এ পর্যন্ত ২০ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালতের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছে।

চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত ফেরত এসেছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত পাওয়া যায়নি। বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই ঘটনার জন্য তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তাকেই এখন পর্যন্ত শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। যদিও এর জন্য দায়ী করা হয়েছে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি)।

আরও পড়ুন: রিজার্ভ চুরি: অবশেষে মামলা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক