ময়মনসিংহ, মিরসরাই ও পটুয়াখালীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা

সবুজ নগরী গড়তে উদ্যোগ নিয়েছে স্রেডা ও নগর উন্নয়ন অধিদফতরনবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ করে সবুজ শহর গড়ে তোলার উদ্যোগ আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে ময়মনসিংহ শহর, চট্টগ্রামের মিরসরাই পৌরসভা ও জেলা শহর পটুয়াখালীকে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে এই তিনটি শহরকে গড়ে তোলা হবে সবুজ শহর হিসেবে। আর এই দায়িত্বে থাকছে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) এবং নগর উন্নয়ন অধিদফতর।
বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীতে স্রেডার কনফারেন্স রুমে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে স্রেডা ও নগর উন্নয়ন অধিদফতরের মধ্যে। চুক্তি অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি-নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে বিবেচনায় নিয়ে নগর উন্নয়ন প্রকল্পে প্রয়োজনীয় পরিমাণ জায়গা নির্ধারণে যৌথভাবে কাজ করবে এই দুই প্রতিষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে জমির প্রয়োজন হয়। দুই সংস্থা মিলে সেই জমির সংস্থান করবে। এ ছাড়া, নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার বিভিন্ন প্রকল্পে নবায়নযোগ্য জ্বালনি এবং জ্বালানি দক্ষতা ও জ্বালানি সাশ্রয়ী কার্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি এর প্রচার-প্রসারে সেমিনার, কর্মশালা, গোলটেবিল বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে একযোগে কাজ করবে উভয়পক্ষ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। চুক্তিতে স্রেডার সদস্য (নবায়নযোগ্য জ্বালানি) সালিমা জাহান এবং নগর উন্নয়ন অধিদফতরের পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিদ হোসেন তৌফিক নিজ নিজ পক্ষে সই করেন। এ সময় স্রেডার চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের, সদস্য ও বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব মো. আলাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান বিদ্যুৎ সচিব বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে চায়। এ জন্য এখাতে উৎসাহ দিতে প্রয়োজনে প্রণোদনা দিতে হবে। পাশিপাশি তিনি বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।’
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ভবিষৎ জ্বালানি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ অনুযায়ী, জীবাশ্ম জ্বালানির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ (দুই হাজার মেগাওয়াট) নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে উৎপাদন করতে হবে। অন্যদিকে, সরকার ২০২০ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে।
সরকার বলছে, একটি শহরে যথেষ্ট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এককভাবে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে তা করে ওঠা সম্ভব হয় না। এসব ক্ষেত্রে নগর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। এজন্য নগর উন্নয়ন পরিকল্পনকারীদের সম্পৃক্ত করা জরুরি। আর এতদিনে সরকার সেই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।