বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন বাতিলের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ সোমবার






সংবাদ সম্মেলনসরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাতে কেউ কথা বলতে না পারে সেজন্যই বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। তাদের দাবি, অপরাধীদের রক্ষায় আবারও এই দায়মুক্তি আইনের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এই আইন থেকে সরে আসাসহ সুন্দরবনবিনাশী সব প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আগামী সোমবার (১৪ মে) সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১২ মে) শিশুকল্যাণ পরিষদের মিলনায়তনে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে দায়মুক্তি আইন: অভুতপূর্ব দুর্নীতি, অনিয়ম এবং প্রাণ-প্রকৃতিবিনাশী প্রকল্প দিয়ে বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহম্মদ বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
মূল প্রবন্ধে আনু মুহম্মদ বলেন, বিদ্যুৎখাতে দ্রুত পরিবর্তনের নামে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ জনস্বার্থবিরোধী নানা চুক্তি বা অন্য কোনও কাজ বা আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে কোনও ধরনের প্রতিকার পাওয়ার অধিকার হরণ করে ২০১০ সালে এই আইন করা হয়েছিল। এটি প্রথমে দুই বছরের জন্য করা হয়। পরে ২০১২ সালে এই মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। ২০১৪ সালে এসে এর মেয়াদ ৪ বছরের জন্য বাড়োনো হয়। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এখন আবার নতুন করে ২০২১ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর তোড়জোড় করছে সরকার। তিনি বলেন, অনিয়ম, ‍দুর্নীতি বন্ধ করতে সরকারকে অবশ্যই এই আইন থেকে সরে আসতে হবে। এ পর্যন্ত হওয়া সব অনিয়ম ও লুটপাটের সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
দায়মুক্তি আইন বাতিল ছাড়াও জাতীয় কমিটি আরও কিছু দাবি তুলে ধরে। জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এলএনজি আমদানি নিরর্ভরতা বন্ধ করে স্থল ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে হবে। গ্যাস সংযোগে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, রামপাল-রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ পিএসসি-২০১৬-এ বর্ণিত ব্যয়বহুল, আমদানি ও ঋণনির্ভর, প্রাণ-প্রকৃতিবিনাশী বিদ্যুৎকেন্দ্রমুখী পরিকল্পনা বাতিল করে সুলভ, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জাতীয় কমিটির বিকল্প জ্বালানি প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এসব দাবিতে আগামী ১৪ মে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের জন্য আনু মুহম্মদ সবার প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি জানান, মে ও জুন মাসে জনসংযোগ, প্রচার, বিভিন্ন অঞ্চলে সভাসমাবেশ করতে জাতীয় কমিটি। জুলাই মাসেও বিভিন্ন বিভাগীয় সদরে বিভাগীয় সমাবেশ করা হবে। এরপরও যদি সরকার তাদের ভূমিকা থেকে সরে না আসে তাহলে জুলাই মাসের শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে জাতীয় কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে রুহিন হোসেন প্রিন্স, টিপু বিশ্বাস, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, খালেকুজ্জামান লিপন, নাসিরুদ্দীন, বাচ্চু ভুইয়াসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।