কৃষিপণ্যের লাভজনক মূল্য নিশ্চিতেই শুল্কারোপ: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (ফাইল ছবি)

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘গত বছর বন্যার কারণে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তাই খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এখন দেশের কৃষকদের স্বার্থরক্ষার জন্য কৃষিপণ্যের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করতেই আবারও ২৮ ভাগ আমদানি শুল্কারোপ করা হয়েছে।’

রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ জাতীয় কনভেনশন এবং ইন্টারন্যাশনাল সেমিনারের দ্বিতীয় দিনে ‘ইমার্জিং ফুড সিসটেম: ভেল্যু এডিশন, সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড ফুড সেফটি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘একসময় দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের খাদ্যের অভাব ছিল। আর আজ দেশে ১৬ কোটির বেশি মানুষ, কিন্তু কেউ খাদ্যের অভাবে নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দু’টি উদ্দেশ নিয়ে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এর একটি হলো বাঙালি জাতির মুক্তি অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং অপরটি হলো ক্ষুধা ও দরিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। আজ তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ক্ষুধা ও দরিদ্রমুক্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একসময় যারা বাংলাদেশকে বলতো, তলাবিহীন ঝুড়ি, বিশ্বে দরিদ্র দেশের মডেল। আজ তারাই বলছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের মিরাকল। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে দেশে ৪০৭ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দেশের আবাদি জমির পরিমাণ কমলেও কৃষিবান্ধব সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও গৃহীত পদক্ষেপে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে গঠিত সরকারের আমলেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বিএনপি সরকার আবার বাংলাদেশকে খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে। তাদের উদ্দেশ ছিল– বাংলাদেশকে বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ শ্রীলংকায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করেছে, নেপালে দুর্যোগের সময় ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশের প্রথম ধাপ তিন শর্ত পূরণ করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয়। বাংলাদেশের গ্রাম আজ শহরে পরিণত হয়েছে। গ্রামের মানুষ আজ শহরের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিষয়ভিত্তিক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. এসপি গুপ্ত, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাইফুদ্দিন শাহ  এবং ড. কাটিনকো ডি বালাগ। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষিবিদ এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাসিম।