বাপার্ড আধুনিকায়নে ৩৪৪ কোটি টাকার প্রকল্প

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমিকে (বাপার্ড) আরও সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এর মাধ্যমে পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে নিয়োজিত সরকারি ও বেসরকারি খাতের মানবসম্পদের সক্ষমতা বাড়বে। দারিদ্র্য বিমোচনে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের পাশাপাশি গবেষণা, প্রায়োগিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের আঞ্চলিক ও আর্থ-সামাজিক বৈষম্য নিরসন সম্ভব হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ লক্ষ্যে বাপার্ডকে সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দকৃত অর্থের পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আওতায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এবং স্থাপত্য অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে। ২০২০ সলের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় মোট ৩০ দশমিক ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। যেখানে নির্মিত হবে ১০ তলা ফাউন্ডেশনের প্রশাসনিক ভবন। থাকবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন। প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চলবে। প্রকল্পের আওতায় একাডেমিক ভবন ও হোস্টেল ভবনের মাঝে করিডোর নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্স ক্যাম্পাসে নতুন করে নির্মিত হবে শহীদ মিনার, ব্যাডমিন্টন কোর্ট ও মিনি পার্ক। প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যানবাহন কেনা হবে। নিয়োগ দেওয়া হবে প্রয়োজনীয জনবল।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স’ সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়নে প্রকল্পটি (২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদে) ২০১০ সালের ৩০ মার্চ একনেকে অনুমোদন করা হয়। এ সময় প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য ছিল বিআরডিবির আওতাধীন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সটির উন্নয়ন। পরবর্তীতে ২০১২ সালে প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সটিকে স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করে ‘বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি’(বাপার্ড) নামকরণ করা হয়। একটি স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাপার্ডের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশোধন করা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমিকে (বাপার্ড) একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জাতীয় পর্যায়ের পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের উৎকর্ষ কেন্দ্রে রূপান্তর করা সম্ভব হবে। এতে আধুনিক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সুবিধাদি নিশ্চিত করা যাবে। এছাড়া পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে নিয়োজিত সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের মানবসম্পদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচনে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি গবেষণা, প্রায়োগিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের আঞ্চলিক ও আর্থ-সামাজিক বৈষম্য নিরসনেও প্রকল্পটি ভূমিকা রাখবে।