বড় উত্থানের পর টানা দরপতন শেয়ারবাজারে

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ

আগের সপ্তাহের বড় উত্থানের পর টানা দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গত সপ্তাহজুড়ে টানা দরপতন হলেও শেয়ারবাজার এখন স্বাভাবিক। এক সপ্তাহ বাড়বে, পরের সপ্তাহ কমবে এভাবেই শেয়ারবাজারে গতি আসবে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবগুলো মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন ঘটলো।

ডিএসই’র তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে ডিএসই-তে লেনদেন কমেছে ৩১ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসই-তে পাঁচ কার্যদিবসে মোট লেনদেন হয় ৩ হাজার ৮৭ কোটি ৪৫ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৭ টাকা। তার আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫২১ কোটি ৭৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪৪ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৪৩৪ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার ৮৭ টাকা।

বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৮ পয়েন্ট কমে চার হাজার ৪৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অবশ্য এর আগে স্টেকহোল্ডারদের একটি অংশের দাবির কারণে গত ১০ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়। ফলে শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়।

টানা পতনের কবলে পড়ে চার হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে নেমে যাওয়া ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স হু হু করে বেড়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৪ হাজার ৭৫৮ পয়েন্টে চলে আসে। অর্থাৎ পতন কাটিয়ে ১০ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিএসই’র প্রধান সূচক বাড়ে ৩৭৩ পয়েন্ট।

বড় উত্থানের পর আবারও শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফের আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হঠাৎ শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের কারণেই টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। কারণ, সরকারি ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারে আসার কথা রয়েছে। শেয়ারবাজারে আসতে চায় বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি রবি আজিয়াটাও। মালয়েশিয়াভিত্তিক কোম্পানিটির মূল পরিচালনা পর্ষদ এ ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে এরই মধ্যে বৈঠকও করেছে রবি।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘গেলো সপ্তাহের দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, আগের সপ্তাহে বড় উত্থান হয়েছিল। সরকারি ব্যাংকগুলোর বাজারে আসার কথা রয়েছে। এখন দরকার সুশাসন।’ সুশাসন কায়েম হলেও বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডিএসই’র তথ্য বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই-তে ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। গেলো সপ্তাহে সব ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। গত সপ্তাহে ৩৬০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বেড়েছে ৬৬টি, কমেছে ২৮০টি, অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি এবং লেনদেন হয়নি দুটি কোম্পানির শেয়ার।