নিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসি ব্যাংক ও অন্যদের আবেদন খারিজ

বাংলাদেশ ব্যাংকনিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসি ব্যাংক ও অন্যদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (২৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি), সোলায়ার রিসোর্ট ও ক্যাসিনো, মাইডাস রিসোর্ট ও ক্যাসিনো এবং অন্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার বিপরীতে বিবাদীদের করা আবেদন নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট আদালত খারিজ করেছেন। মামলার বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট আদালতের এখতিয়ারবহির্ভূত হওয়ায় আরসিবিসি যে আবেদন করে তা forum non conveniens doctrine অনুযায়ী আদালত খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ চুরি নিউ ইয়র্কে অবস্থিত মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে হয়েছিল এবং সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, জালিয়াতির মাধ্যমে পেমেন্ট অর্ডার, বিভিন্ন করেসপন্ডেন্ট অ্যাকাউন্টে চুরি করা অর্থের লেনদেন এবং এসব অ্যাকাউন্ট থেকে দেশের বাইরে অর্থ প্রেরণ—সবই নিউ ইয়র্কে সংঘটিত হয়েছে।

আদালতের রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানি বাউম তার ঘোষণায় দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেছেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি রয়েছে, যাতে ফেডারেল রিজার্ভ তার মামলা-মোকদ্দমার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককে কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে। এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট বলেছেন, জনস্বার্থের দিকগুলো বিবেচনায় নিউ ইয়র্কই এ মামলা পরিচালনার জন্য যথাযথ ফোরাম, যেখানে ডিস্ট্রিক্টের একটি ফেডারেল প্রতিষ্ঠান সাইবার হামলার শিকার হয়েছে।

আদালত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক Racketeer Influenced and Corrupt Organisations Act (RICO)-এর আওতায় আরসিবিসি ব্যাংক ও জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগটি টেকনিক্যাল বিষয় বিবেচনায় ফেডারেল আদালতে বিচারের জন্য গ্রহণ করেনি। অর্থাৎ এ সিদ্ধান্তের ফলে আরসিবিসি, সোলায়ার, মাইডাস এবং অন্য বিবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, রূপান্তরের ষড়যন্ত্র এবং অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের (এসডিএনওয়াই) পরিবর্তে নিউ ইয়র্ক স্টেট আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে। এক্ষেত্রে মামলাটি নিউ ইয়র্কের আদালতের বিচারিক এখতিয়ারভুক্ত প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক আরসিবিসি এবং অন্য বিবাদীদের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতি আদায়ের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এ অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত আনা হয়েছে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলার জুয়ার টেবিল ঘুরে হাতবদল হয়।