ঢাকায় মারাত্মক গ্যাস সংকট, চরম ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

হঠাৎ করেই কমে গেছে এলএনজি সরবরাহ।  এতে ঢাকার প্রায় সব এলাকায় কম বেশি গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও একেবারে গ্যাস নাই, কোথাও চুলা জ্বললেও চাপ এত কম যে রান্নার উপায় নেই। 

সোমবার (২১ মার্চ) রাতে আমিনবাজারে রাস্তা মেরামত করতে গিয়ে তিতাসের সিটি গেটের গ্যাসের পাইপলাইন ফুটো করে ফেলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে ধানমন্ডি,  মোহাম্মদপুর এবং মিরপুর এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।  রাতে মেরামতের কাজ শুরু করলে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সারাদিনের পর রাত থেকে অল্প অল্প করে গ্যাস আসতে শুরু করে। বুধবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকে আবারও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আবারও গ্যাসের সংকট তৈরি হয়েছে। তিতাসের একটি সূত্র বলছে, আজ পর্যন্ত মেরামতের  কাজ শেষ করতে পারেনি তারা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাস ঘাটতি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল নুরুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা মেরামতের কাজ মোটামুটি শেষ করে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছিলাম। এরমধ্যে আবার এলএনজি সংকটে কমে গেছে সরবরাহ। সরবরাহ না বাড়লে আমাদের হাতে কিছু নেই। গরমের কারণে বেড়ে গেছে চাহিদাও। 

বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা গড়ে প্রায় ৩৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট।  চাহিদার তুলনায় আগে থেকে সরবরাহ করা হয় গড়ে ২৯০০ মিলিয়নের মতো। আগের ঘাটতিই ৬০০ মিলিয়নের মতো।

মঙ্গলবার এলএনজির সরবরাহ ছিল ৬৪০, আজ তা কমে গিয়ে হয়েছে ৫৭০ মিলিয়ন ঘনফুটে।  ফলে ৬০০ মিলিয়ন ঘাটতির সঙ্গে আরও প্রায় ৭০ মিলিয়ন যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নিয়েছে।

এলএনজি সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে এলএনজি সেলের এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এখন গড়ে ৬০০ মিলিয়নের মতো আমরা সরবরাহ করতে পারছি। আগামী পরশু থেকে সরবরাহ বাড়বে। ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো সরবরাহ করতে পারবো বলে আশা করছি আমরা।

ধানমন্ডির বাসিন্দা পারভিন সুলতানা জানান, রাতে গ্যাস আসলেও টিমটিম করেই গ্যাস জ্বলছে। রান্না করা যাচ্ছে না। বাইরে থেকেই খাবার এনে খেতে হচ্ছে।

মোহম্মদপুর থেকে জামাল উদ্দিন জানান, গ্যাস তো এসেছে, কিন্তু তা দিয়ে রান্না হয় না। সকালে ১০টার পর সেই গ্যাসও চলে গেছে।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা অনামিকা সরকার বলেন, কালকে কেরোসিনের চুলায় রান্না করে কাজ চালিয়েছি। এখন গ্যাস আছে, কিন্তু দেয়াশলাই দিয়ে চুলা ধরাতে তিন-চারটা কাঠি যাচ্ছে।  গ্যাস নাই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে আজও কেরোসিনের চুলায় রান্না করছি।

রূপনরগর থেকে রানা জানান, মঙ্গলবার একেবারেই গ্যাস ছিল না। এখন আগুন জ্বলে তবে টিম টিম করে। যাতে রান্না করা সম্ভব নয়। 

বনশ্রী এফ ব্লকের বাসিন্দা নুভা রহমান বলেন, ‘এমনিতে দিনের বেলা গ্যাসের চাপ কম থাকে। আজকে একেবারেই নেই।’

রামপুরা উলন থেকে  পলি আক্তারও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘গ্যাসের চাপ দিনের বেলা থাকে না। অথচ ছোট বাচ্চা থাকায় আমি রান্না করতে হয়। তাই  আগে থেকেই আমি এলপি সিলিন্ডার ব্যবহার করি। এভাবেই ম্যানেজ করতেই হয়। কিন্তু মাসের শেষে বিল কিন্তু নিয়মিতই দিতে হয় আমাদের।’