বাণিজ্য মেলায় যাবেন যেভাবে

ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। ১ জানুয়ারি মেলা শুরুর আগে এর দূরত্ব ও যাতায়াত নিয়ে কিছুটা উৎকণ্ঠা থাকলেও ধীরে ধীরে তা কাটতে শুরু করেছে। তাই ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা—এবার রাজধানীকে স্বস্তিতে রেখে অচিরেই জমে উঠবে মেলা।

রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ দুই প্রান্ত থেকেই পূর্বাচলের মেলা প্রাঙ্গণে আসার সুযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী ও দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো এ তথ্য।

সূত্র জানায়, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাণিজ্য মেলার আগের স্থান থেকে পূর্বাচলের মেলা প্রাঙ্গণের দূরত্ব প্রায় ৩২ কিলোমিটার। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ১৭ কিলোমিটার।

বিমানবন্দর, মিরপুর, টঙ্গী, বনানী, গুলশান, বারিধারা, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, নদ্দা, রামপুরা, বনশ্রী এমনকি জয়দেবপুর, গাজীপুর এলাকার বাসিন্দারা কুড়িল ফ্লাইওভার ব্যবহার করে তিনশ ফিট দিয়ে মেলায় আসতে পারবেন সহজেই।

যেভাবে যাবেন বাণিজ্য মেলায়

যাদের নিজস্ব পরিবহন নেই তারা গণপরিবহনে কুড়িল পর্যন্ত এসে সেখান থেকে বিআরটিসির বাসে মেলায় আসতে পারবেন সরাসরি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িল থেকে বিআরটিসি বাসে মেলা পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে ৪০ মিনিট বা তারও কম।

বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে ৩০টি বিশেষ বাস চালু করেছে বিআরটিসি। এসব বাসে কুড়িল থেকে মেলা পর্যন্ত ভাড়া ৩০ টাকা। এ ছাড়া মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর থেকেও বিআরটিসির বাস মেলা পর্যন্ত চলাচল করছে।

মেলায় আগতদের সুবিধার্থে কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত সড়কটি মেরামতও করা হয়েছে। দুই লেনে গাড়ি চলাচলের জন্য সড়কটি এখন প্রস্তুত। পাঁচটি আন্ডারপাসের কাজও চলছে দ্রুত।

যাত্রাবাড়ী, মুগদা, মান্ডা, সবুজবাগ, খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেক, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড ও নারায়ণগঞ্জ থেকে যারা মেলায় আসবেন তারা গুলিস্তান থেকে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড ধরে গাউছিয়া ও কাঞ্চন ব্রিজ পার হয়ে মেলা প্রাঙ্গণে আসতে পারেন। মেলার কথা বিবেচনায় নিয়ে এ পথেও কিছু উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে।

তবে কাঞ্চন ব্রিজ থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত রাস্তা ততটা প্রসারিত না হওয়ায় সেখানে মাঝে মধ্যেই ইজিবাইক ও ভ্যান-রিকশার জট তৈরি হচ্ছে। মেলা থেকে ফেরার পথে কাঞ্চন ব্রিজের নিচের রাস্তায় ইউটার্নের কারণেও কিছুটা যানজট হচ্ছে। তবে আয়োজকদের অভিমত, ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা বাড়লে এ সমস্যা থাকবে না। মেলায় আসা-যাওয়ার জন্য সড়কটি নিরাপদ বলেও অভিমত তাদের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক নেতা হানিফ খোকন জানিয়েছেন, ‘শেরেবাংলা নগরের তুলনায় পূর্বাচলের দূরত্ব বেশি—এটা সত্য। তবে বাণিজ্য মেলা আয়োজনে পূর্বাচল নিঃসন্দেহে পারফেক্ট জায়গা।’

কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের একটি মেলা আয়োজনের জন্য যে পরিমাণ জায়গা দরকার সেটা শেরেবাংলায় ছিল না। পূর্বাচলে বিশাল পরিসর ও উন্নত অবকাঠামোয় মেলা আয়োজনের ফলে দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতারাও খুশি। এটি আমাদের ভাবমূর্তিও বাড়িয়েছে।’

পূর্বাচলে নবনির্মিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, সুবিশাল পরিসরে দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এর পরিপাটি আয়োজন দেখে যে কেউ খুশি হবেন বলে জানিয়েছেন ইপিবির কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম। কেনাকাটার পাশাপাশি বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে বঙ্গবন্ধু স্টলে পাওয়া যাবে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সম্পর্কিত দুর্লভ কিছু ছবি। মেলা প্রাঙ্গণে বিশাল জলাশয়ে ভাসমান শাপলা যে কারও মন ছুঁয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দর্শকরা।