বিশেষ প্রণোদনা পাচ্ছেন ভালো ঋণগ্রহীতারা

বাংলাদেশ ব্যাংকনিয়মিত ঋণ পরিশোধকারী ভালো গ্রাহকদের জন্য ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আদায়যোগ্য সুদ বা মুনাফার ১০ শতাংশ মওকুফ (রিবেট) সুবিধা কার্যকর করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
এই সার্কুলারে বলা হয়েছে,  বিগত ৩ বছরের লেনদেন বিবেচনায় কোনও ঋণগ্রহীতা ভালো গ্রাহক চিহ্নিত হলে, ২০১৫ সালে ১৯ মার্চ থেকে ওই গ্রাহক ১০ শতাংশ রিবেট সুবিধা পাবেন। তবে, ২০১৫ সালের হিসাব চূড়ান্ত হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণপূর্বক ব্যাংক ২০১৬ সালেও রিবেট সুবিধা দিতে পারবে।
এতদিন ব্যাংকগুলো থেকে খেলাপি ঋণগ্রহীতারাই বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু যারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেন, তারা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাননি। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নও ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভালো গ্রাহকদের প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, ২০১৬ সাল এবং পরবর্তী বছর থেকে কোনও গ্রাহক ভালো ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত হলে সংশ্লিষ্ট হিসাববর্ষে গ্রাহক প্রযোজ্য রিবেট প্রাপ্য হবেন।

সূত্র জানায়, রাজনৈতিক সহিংসতার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত বছর  ব্যাংকিং খাতে  ৫০০ কোটি বা তার বেশি পরিমাণ ঋণখেলাপিদের মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়েই ১২ বছরের জন্য ঋণ পুনর্গঠনের মাধ্যমে খেলাপিঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগের বছরও একই কারণে নামমাত্র ডাউনপেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়। ওই সময় প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপিঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলমান ঋণের ক্ষেত্রে ৩ বছর নিয়মিত ঋণ পরিশোধ সাপেক্ষে ৩য় বছরান্তে ভালো ঋণগ্রহীতার হিসাবের বিপরীতে ওই বছরে আদায়কৃত সুদ বা মুনাফার ১০ শতাংশ অব্যাহতি (রিবেট) দিতে হবে। পরবর্তী বছরগুলোয় ভালো গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত থাকলে এ সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে। তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে বর্ধিত ঋণ সুবিধাও  দিতে হবে। একইভাবে তলবি ও মেয়াদি ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রেও এসব সুবিধা দিতে হবে। এছাড়া, ব্যাংকগুলো বার্ষিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভালো ঋণগ্রহীতাদের পুরস্কৃত করে সামাজিকভাবে মর্যাদা সম্পন্ন বিবেচনা করার মাধ্যমে উৎসাহিত করতে হবে।

চলমান, তলবি ও মেয়াদি ঋণের গ্রাহকরা পর পর ৩ বছর ভালোভাবে ঋণ পরিশোধ করেছেন, যাদের কোনও ঋণ শ্রেণিকৃত করা হয়নি এবং তিন বছরের মধ্যে তাদের সংশ্লিষ্ট কোনও প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত হয়নি তারা ‘ভালো ঋণগ্রহীতা’ বলে বিবেচিত হবেন।

/জিএম/এমএনএইচ/