রাজধানীর কাঁচাবাজার

মাছের বাজারে ভিড় কম, বেড়েছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম

ঈদের আগ মুহূর্তে রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে ক্রেতা তুলনামূলক কম। যারা জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায় ঈদ করছেন কিংবা এখানকার স্থানীয় তারাই শেষ মুহূর্তে ঈদের বাজার করছেন। মাছের বাজারে ক্রেতা তেমন একটা নেই। তবে মাংসের বাজারে বেশ ভিড় রয়েছে। ভিড় কম থাকলেও মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত ছিল। কিন্তু গরু ও মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা করে।

শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সকালে মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচা বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি ও কক মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে শশা, টমেটো, গাজর ও লেবুর মতো সালাদ জাতীয় সবজির দাম। দ্রব্যমূল্যের এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২১০- ২২০ টাকা। এ সপ্তাহে দাম বেড়ে  হয়েছে ২৬০-২৬৫ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে কক মুরগির দাম ছিল ৩৩০ টাকা কেজি। এ সপ্তাহে হয়েছে ৩৮০-৩৯০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের দামও বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা। ৭৫০ টাকার মাংস আজকে ৮০০ টাকা কেজি। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতারা বলছে, ঈদ আসাতে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। তাই মাংসের দামও কিছুটা বেড়েছে। 

মুরগির বাজার

সরকারি চাকরিজীবী শেখ মো. আয়নাল বাজার করতে এসে হতাশ। তিনি বলেন, ‘কি কিনবো বলেন। সব কিছুর দাম বেশি। দুইটা মুরগি কিনেছি ৩৯০ টাকা করে কেজি। কয়েকদিন আগেও এটা ৩০০ টাকা ছিল। ১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে এসেছি। এখন শুধু মুরগি কিনেই ফিরতে হচ্ছে। বাচ্চাদের কীভাবে খাওয়াবো বলেন।’

মাছের দাম রয়েছে মোটামুটি অপরিবর্তিত। রুই মাছ ৩৪০- ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭৫০-৮০০ টাকা ও কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা কেজি। তবে ইলিশ মাছের দাম তুলনামূলক কমেছে। গত সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ছিল ৮০০ টাকা কেজি, আর এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ছিল ১ হাজার ৮৫০ টাকা কেজি। এই সপ্তাহে ৯৫০ গ্রাম ইলিশের দাম ১৩০০ টাকা আর ৮৫০ গ্রাম ইলিশের দাম ৯০০ টাকা কেজি। 

বাজার করতে আসা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, ‘মাছের দাম আমার কাছে ঠিকই মনে হয়েছে। কিন্তু মাংসের দাম বেশি। আর সালাদ জাতীয় সবজির দাম অনেক বেশি।’

শশার দাম গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা কেজি। এ সপ্তাহে হয়েছে ১৪০-২০০ টাকা কেজি। টমেটো ৫০-৬০ টাকা কেজি। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০- ৬০ টাকা, আর গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা কেজি। এছাড়া কাঁচা মারিচ ১০০ কেজি, ধনিয়া পাতা ও পুদিনা পাতা ২০০ টাকা কেজি।

সালাদ-জাতীয়-সবজি

এছাড়া আলুর দাম স্বাভাবিক থাকলেও বেড়েছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। আর পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা এবং রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। 

এছাড়া বেগুন ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙা ১২০ টাকা, করল্লা ও উচ্ছে ১০০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ১৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা ও পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে।

মুদি দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি দরে, আর মুগ ডাল ১২৫ টাকা, খেশারি ডাল ৯০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা ও খোলা সরিষার তেল ২৫০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। আর পোলাওয়ের চাল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেট ১৫৫ টাকা কেজি ও খোলা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।