জাপানে ‘বঙ্গবাজার’

বঙ্গবাজার– বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পরিচিত একটি মার্কেট। মূলত তৈরি পোশাক বা গার্মেন্ট পণ্যের বাজার হিসেবে খ্যাতি এই মার্কেটের। রাজধানীর গুলিস্তানের পাশে ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত এই বঙ্গবাজার। তবে জাপানের টোকিও শহরের অদূরে সাইতামা এলাকায়ও একটি বঙ্গবাজার আছে। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার একজন বাংলাদেশি প্রবাসী। জাপানে অন্যতম বৃহৎ হালাল সুপার মার্কেট এই বঙ্গবাজার।

জাপানে হালাল পণ্য পেতে হালাল সুপারশপগুলোই ভরসা মুসলিমদের জন্য। বঙ্গবাজার হালাল সুপারশপ হওয়ায় বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের মুসলমানদের কাছেও এটা বেশ জনপ্রিয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের মাছ, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য থাকায় অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এখানে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসেন বাংলাদেশিরা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে বঙ্গবাজার।

সরজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা এই সুপার শপে কেনাকাটা করছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি অনেকেই আছেন। গরু, ছাগল ও ভেড়া হালাল পদ্ধতিতে জবাই করে মাংস বিক্রি হওয়ায় বঙ্গবাজারে বেশি আসেন মুসলমানেরা। দেশের মাছ, মসলা, শুঁটকিসহ বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায় বলে এখানে বাংলাদেশিদের ভিড় থাকে। দামও তুলনামূলকভাবে অন্যান্য সুপারশপের চেয়ে কম। এছাড়া কসমেটিকস, প্রক্রিয়াজাত খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য একই ছাদের নিচে থাকায় জাপানিরাও আসেন এখানে।

লাউ কিনতে দেখা গেলো প্রবাসী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে। তিনি জানলেন, এক বছর পর লাউ দেখতে পেয়ে কিনলেন তিনি। মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি যে এলাকায় থাকি সেখান থেকে এই সুপার শপের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। এরপরও এখানে আসি হালাল পণ্যের জন্য। একইসঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যও কিনতে পারি এখান থেকে।

সজনে কিনতে দেখা গেলো আরও কয়েকজন বাংলাদেশিকে। এই সুপারশপের সবজি কর্নারে বেশির ভাগই বাংলাদেশি সবজি। এছাড়া বাংলাদেশ মশলাও এখানে পাওয়া যায়।

প্রবাসী আমিনুল ইসলাম বলেন, জাপানিরা তেমন কোনও মশলা খায় না। ফলে এখানে সহজে মশলা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশি ও ভারতীয় শপগুলোতে শুধু মশলা পাওয়া যায়। বঙ্গবাজারে দেশি মাছও পাওয়া যায়। তাই এখানে কেনাকাটা করি।

বঙ্গবাজারের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি প্রবাসী বাদল চাকলাদার। তিনি বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন জাপানের সভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করছেন। বাদল চাকলাদার জানিয়েছেন, বঙ্গবাজার বাংলাদেশিদের জন্য যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, একইভাবে এখানে জাপানিরাও কাজ করেন। দক্ষ কর্মী পেলে আরও অনেক বাংলাদেশির জন্য কাজের সুযোগ আছে বলেও জানালেন এই উদ্যোক্তা।

১ সেপ্টেম্বর জাপানে সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এই ফ্লাইটের মাধ্যমে আরও বেশি বাংলাদেশি পণ্য জাপানে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন ক্রেতারা।