চার শিল্পের ৫৭০ উদ্যোক্তা ইআরএফ সহায়তা পাচ্ছেন

দেশের চার শিল্পের ৫৭০ উদ্যোক্তা এক্সপোর্ট রেডিনেস ফান্ড (ইআরএফ) সহায়তা পাচ্ছেন। ইআরএফ বা রফতানি প্রস্তুতি তহবিলের আওতায় ওই ৫৭০ উদ্যোক্তাকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সম্ভাবনাময় চার রফতানি খাত– চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, প্লাস্টিক এবং হালকা প্রকৌশল শিল্পের উদ্যোক্তারা এই সুবিধা পাচ্ছেন। মূলত উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ কাঠামোতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়া হয়।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল আমারিতে এক্সপোর্ট রেডিনেস ফান্ডের সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব (ইসিফোরজে) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মনছুরুল আলমের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অ্যাপক্সে ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এবং বিশ্বব্যাংকের লিড কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ও প্রোগ্রাম লিডার সোলায়মান কলিবেলি বক্তব্য দেন। বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইআরএফ টিম লিডার ডেভ রুঙ্গানাইকালু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট হোসনা ফেরদৌস সুমি, ইআরএফ কর্মসূচির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইয়াং কনসালটেন্টসের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রফতানি প্রস্তুতি তহবিলের আওতায় মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৩৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অনুদান সহায়তা ছিল ১৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের। বাকি প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলার উদ্যোক্তারা নিজেরা ব্যয় করেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইসিফরজে প্রকল্পের আওতায় ইআরএফ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, রফতানি সম্প্রসারণের জন্য চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, প্লাস্টিক এবং হালকা প্রকৌশল শিল্প– এই চার খাতের উদ্যোক্তাদের কমপ্লায়েন্ট হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইআরএফ গঠিত হয়। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি ইআরএফ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে এবং আজ এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম শেষ হলো। এই কর্মসূচির আওতায় চার রফতানি খাতের উদ্যোক্তাদের ম্যাচিং গ্র্যান্ট দেওয়া হয়েছে।

তপন কান্তি ঘোষ তার বক্তব্যে বলেন, ‘রফতানি বহুমুখীকরণের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ জরুরি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আমরা বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছি না। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের সহায়তা করতে পারে।’

তিনি মনে করেন, ইআরএফ তহবিলের মতো কর্মসূচি দেশের রফতানিকারকদের প্রতিযোগী সক্ষম করে গড়ে তোলার পাশাপাশি রফতানি বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘রফতানি প্রস্তুতি তহবিল অর্থনীতির বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে।’ তিনি এ ধরনের সহায়তার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

ইআরএফ তহবিলে থেকে একটি কোম্পানিকে প্রথম পর্যায়ে কারখানা বা পণ্য অ্যাসেসমেন্টের জন্য সর্বোচ্চ ৫ হাজার ডলার এবং কারখানা বা পণ্যের গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ধাপে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ডলার দেওয়া হয়। তৃতীয় ধাপে আপগ্রেডেশন এবং আধুনিকায়নের জন্য ২ লাখ ডলার এবং কোভিড সুরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের জন্য ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানে গড়ে ১০ শতাংশ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে।