ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত

ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ। তবে দূরত্ব বিবেচনায় প্রক্রিয়াটি জটিল বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস। তবে আমদানি করা সম্ভব, এটাও মনে করেন তিনি।

বুধবার (২৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত।

পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস বলেন, ব্রাজিলের মাংস খাতের বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা আছে। ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে জীবন্ত গরু নিয়ে আসা সম্ভব।

চলতি মাসের ৭-৮ তারিখ ঢাকা সফর করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা। সে সময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে আগামী কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা বিবেচনার অনুরোধ করেন।

চলতি বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা। প্রধানমন্ত্রীর ব্রাজিল সফর প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো বলেন, জুলাইয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিল যাবেন। তিনি জি-২০ সম্মেলনের আগে ব্রাজিল সফর করবেন বলে আশা করছি। যদি তিনি ব্রাজিল যান তাহলে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে যে চুক্তিগুলো সম্ভব হয়নি তা হয়তো স্বাক্ষর হতে পারে। 

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান পাওলো ফার্নান্দো।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বে বিভিন্ন সংকটের মাঝে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রাজিলের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। ভারত ব্রাজিল থেকে প্রচুর ইথানল কেনে। কোভিডের পর ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্ব অস্থির হয়ে পড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই তেলের বিকল্প হিসেবে ইথানল ব্যবহার সস্তা হবে।

ব্রাজিলের বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রাজিল বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্যের একটি বড় বাজার হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে। এটাই সবচেয়ে উত্তম সমাধান।

ব্রাজিলে ভিসা প্রত্যাশীর চাহিদা বাড়ছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিগত বছরগুলোতে ভিসার আবেদন বেড়েছে, এটা একটা সমস্যাও বটে। কারণ আমাদের এত পরিমাণ লোকবল নেই। আমরা ঢাকায় একটি ভিসা সেন্টার ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করছি। তাহলে আমরা আরও বেশি সংখ্যক ভিসা দ্রুত ইস্যু করতে পারবো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে আমাদের মন্ত্রীর। তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে এটি নিয়ে কাজ চলছে। আমরা আশা করছি শিগগিরই আমরা ঢাকায় ভিসা সেন্টার চালু করতে পারবো। 

অনুষ্ঠানে ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু বক্তব্য রাখেন।