এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংককে সুদের হার কমানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

বেইজিংভিত্তিক এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) বাংলাদেশকে যে ঋণ দেয়, সেটির সুদের হার কমানোর অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বেইজিংয়ে ওই ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ অনুরোধ করেন।

বৈঠকের পরে সেন্ট রেগিস হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন খাতে এবং বিশেষ করে উপকূলব্যাপি যে জলবায়ুসহিষ্ণু যে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে এবং বাংলাদেশের নদীগুলো ড্রেজিং করতে অর্থায়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেন।

এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতে আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় ব্যাংকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানান যাতে তাদের ঋণের যে সুদ সেটি বাংলাদেশের জন্য আরও কমানো হয়।’

এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং এবং  কমিউনিস্ট পার্টির অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চীনের নেতাদের অনুরোধ জানান,  রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ছয় বছর ধরে আছে এবং তাদের ফেরত নেওয়া হচ্ছে না। এটি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যায় সেটির জন্য চীনের সহায়তা কামনা করেছেন শেখ হাসিনা, জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, এর জবাবে চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং জানান যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্রে চীন ফ্যাসিলিটেটর ভূমিকা পালন করবে। তাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন যাতে শুরু হয় সেটির সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন (ছবি: ফোকাস বাংলা)

একই আলোচনায় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য রয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তরে চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে মানসম্মত পণ্য আমদানির জন্য উদ্যোগ নেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আগামী বছর বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে এবং এটি যেন আমরা যথাযথ ও অর্থপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলি টানেল নির্মাণে চীনের কন্ট্রাক্টর এবং প্রকৌশলীদের অবদানের জন্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।