জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থা নিরসনে আজ রবিবার (২৯ জুন) বিকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নির্ধারিত বৈঠক শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গেছে।
বৈঠকটি বিকাল ৪টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে আন্দোলনকারীরা ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিও সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে মতানৈক্যের কারণে আলোচনায় বসা হয়নি।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব শফিউল বাসার বাদল জানান, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের আজ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু উপদেষ্টার পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত না করলে তিনি আলোচনায় বসবেন না। আমরা এই অবস্থানে রাজি নই। কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনা করতে গেলে আবার ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা আছে। এর ফলে একদিকে আলোচনার সম্ভাবনা ভেস্তে গেছে, অন্যদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এ রাজস্ব প্রশাসনের কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।
বন্দরে অচলাবস্থা
কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগে দ্বিতীয় দিনের মতো অফিস কার্যত বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বন্দরে পণ্য খালাস ও জাহাজে তোলার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় আমদানিকারক ও রফতানিকারকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। কেবল বৈদেশিক যাত্রীসেবা চালু রয়েছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে।
চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে স্লোগান
এনবিআরের সদর দফতর আগারগাঁও এলাকায় আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তারা এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন এবং দাবি করছেন, বর্তমান অচলাবস্থার জন্য চেয়ারম্যানের ‘একচেটিয়া ভূমিকা’ দায়ী।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে গভীর রাতে জারি হওয়া ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫' অনুসারে এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর থেকেই কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।