আগামী বাজেটে টেলিভিশন ও পত্রিকার মালিকদের যত চাওয়া

বিজ্ঞাপন নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে দ্বৈত করের বোঝা যেন বহন করতে না হয়, সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)। সংবাদপত্র শিল্পেও কর কমানোর দাবি জানিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনস অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। নতুন বাজেটকে সামনে রেখে রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক- বাজেট আলোচনার অংশ হিসেবে এসব বিষয় উঠে আসে।

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পাশাপাশি পেশাজীবীদের সঙ্গে রবিবার থেকে শুরু হওয়া প্রাক-বাজেট আলোচনার প্রথম দিনে এনবিআর-এর পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয় টেলিভিশন ও সংবাদপত্র মালিকদের।

আলোচনায় সংবাদপত্র শিল্পের পক্ষ থেকে নিউজপেপারের ওপর কর কমিয়ে শতকরা পাঁচ ভাগ করার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া বিদেশি চ্যানেলগুলোর কাছ থেকে প্রচারস্বত্ত্ব কিনতে কর মওকুফের আহ্বানও জানানো হয়।

নোয়াব সভাপতি একে আজাদ বলেন, সংবাদপত্রের আয়ের ওপর টিডিএস ট্যাক্স ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা প্রয়োজন। কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশের স্থলে এআইটি শূন্য শতাংশ করা জরুরি।

সংবাদপত্র শিল্প রুগ্ন অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও করপোরেট হারে কেন সর্বোচ্চ অবস্থানে রাখা হবে—এমন প্রশ্ন তোলেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।

বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বিষয়গুলো বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ট্যাক্সের বোঝাটা এক সোর্সেই হওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপনের করের টাকা যাতে এক সোর্স থেকে কেটে রাখা হয় এমন দাবি জানান অ্যাটকো’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ক্যাবল টিভির গ্রাহক সংখ্যা কারও জানা নেই। সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন হলে সরকারের কাছে গ্রাহকের হিসাব থাকবে। এতে রাজস্ব আয় হবে বছরে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে যা ১০০ কোটি টাকারও নিচে।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে কয়েক কোটি সেট টপ বক্স লাগবে। তাই সেট টপ বক্স আমদানিতে নির্দিষ্ট হারে রেয়াত দেওয়া প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব আয়ে নজর দিলে দুটো লাভ হবে—সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে। গ্রাহকরাও ডিজিটালাইজেশনের সুফল পাবেন।’

বিজ্ঞাপনে বিল গ্রহণে উৎসে ভ্যাট আদায়ে দ্বৈত করের জটিলতা রয়েছে বলে প্রাক-বাজেট আলোচনায় জানায় অ্যাটকো। এছাড়া বিজ্ঞাপনে উৎস কর প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

এ সময় এনবিআর সদস্য জাকিয়া সুলতানা (ভ্যাট নীতি) জানান, বিজ্ঞাপনে যিনি চালান ইস্যু করবেন, তিনি যদি ভ্যাট দেন, তাহলে ডাবল হওয়ার কথা নয়।

আগামী বাজেটকে আরও অংশগ্রহণমূলক, যৌক্তিক, সুষম ও গণমুখী করতে বরাবরের মতো এমন আয়োজন করা হয়েছে এনবিআরের পক্ষ থেকে। প্রতিদিন দুটি সেশনে ২০ মার্চ পর্যন্ত এসব আলোচনা চলবে।