কুমিল্লায় মাতৃভাণ্ডারের চালান ফাঁকি, দুটি মার্কেটের ২০০ দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই

কুমিল্লা শহরের প্লানেট এসআর মার্কেট ও ময়নামতি সুপার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ২০০টি দোকানের মধ্যে কোনোটিরই ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) নিবন্ধন পায়নি ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। সরকারের কোষাগারে এসব দোকান থেকে ভ্যাট জমা দেওয়ার প্রমাণও মেলেনি। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) খবরটি জানিয়েছেন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।

জানা যায়, এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দার একটি বিশেষ দল সোমবার (১৭ জানুয়ারি) কুমিল্লা শহরের দুটি মার্কেটে জরিপ সম্পন্ন করে। এর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মার্কেট দুটির কোনও দোকান নিবন্ধন গ্রহণ করেনি এবং তারা ভ্যাটও দেয় না। কুমিল্লায় ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন এবং সহকারী পরিচালক আলমগীর হুসেনের নেতৃত্বে গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এমন চিত্র উঠে আসে।এসব প্রতিষ্ঠান মূসক নিবন্ধন গ্রহণ না করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটকে ইতোমধ্যে অনুরোধ করা হয়েছে।

২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর টাউন হলের কান্দিরপাড়ে চালু হয় প্লানেট এসআর মার্কেট। এখানে মোট ৮০টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে ভ্যাট গোয়েন্দার পরিদর্শনকালে ৫৬টি দোকান খোলা পাওয়া যায়। এগুলোর কোনোটিতে ভ্যাট নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া যায়নি। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে দেখা যায়, মার্কেটের কোনও প্রতিষ্ঠানই ভ্যাট নিবন্ধন নেয়নি।

অন্যদিকে ক্যান্টনমেন্ট ফটকের সম্মুখে ময়নামতি সুপার মার্কেটে অভিযান চালানোর সময় মোট ১২০টি দোকানের মধ্যে ৬৪টি দোকান খোলা পাওয়া যায়। কোনও প্রতিষ্ঠানেরই ভ্যাট নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া যায়নি। 

গতকাল কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে অবস্থিত মাতৃভাণ্ডারেও অভিযান চালায় ভ্যাট গোয়েন্দার দলটি। তাদের দুই জন কর্মকর্তা বিক্রয় পর্যবেক্ষণের জন্য সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। তারা ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখলেও গড়ে ২০-২২টি চালান কাটা হয়। অভিযানে জব্দকৃত চলতি বছরের ১৬ দিনের কাগজ যাচাই শেষে ৪ লাখ টাকার বিক্রয় গোপনের প্রমাণ মিলেছে।

এছাড়া ভ্যাট গোয়েন্দার দলটি কুমিল্লার বনফুল অ্যান্ড কোং এবং কিষোয়ান স্ন্যাকসের কুমিল্লা শাখায় অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠান দুটিতেও ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পাওয়া যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানা গেছে।

২০২১ সালের ২৫ মে থেকে ৩১ মে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের চারটি জরিপ দল মাঠে নেমে রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের মার্কেটগুলোতে জরিপ করে। পরবর্তী সময়ে সারাদেশে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণে ব্যাপকভাবে সাড়া পাওয়া যায়।