‘উন্নত দেশ গড়তে ব্যবসা সহজ ও গতিশীল করতে হবে’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ২০২৬ সাল থেকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে আমাদের। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনও বিকল্প নেই। এজন্য বাণিজ্য সহজ করতে হবে, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ন্যাশনাল ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন কমিটির (এনটিএফসি) ৬ষ্ঠ সভায় সভাপতিত্ব করে এ কথা বলেন তিনি।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নতদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আমাদের ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। এজন্য পণ্য ও সেবা উৎপাদনের পাশাপাশি এগুলোর মান উন্নত করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। আমাদের ২০২৬ সাল থেকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এলডিসিভুক্ত দেশের সুবিধা আমাদের থাকবে না। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য আমাদের তৈরি হতে হবে। আমাদের হাতে সময় অনেক কম। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের হাতে কোনও বিকল্প নেই। এজন্য বাণিজ্য সহজ করতে হবে, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবার জন্য ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন রোড ম্যাপ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের আমদানি-রফতানি ও বিনিয়োগ কার্যক্রমকে আরও সহজ ও গতিশীল করতে হবে। বিশেষ করে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমদানি-রফতানি এবং ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা প্রয়োজন। সীমান্ত বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে আধুনিক করার বিকল্প নেই। প্রয়োজনে বিদ্যমান বাণিজ্য নীতি, আইন সংস্কার করতে হবে।

উল্লেখ্য, ন্যাশনাল ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন কমিটি (এনটিএফসি)’র সভা বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ৫টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজকের সভায় দেশে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজ করতে পণ্যের গুণগতমান টেস্ট, কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়াকরণ, বিভিন্ন বন্দরে আমদানি ও রফতানি সহজ ও দ্রুতকরণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে পরিবহন সহজ, সিঙ্গেল উইনডো কার্যকর, আমদানি পণ্য দ্রুত খালাস, রফতানি পণ্যের দ্রুত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা, সমুদ্র বন্দর, স্থল বন্দর ও আকাশ পথের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন করা, কানেকটিভিটি সহজ করা, পণ্য পরিবহনে রেল পথকে আধুনিক ও সহজ করা, রফতানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ে করণীয় নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় বিগত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সকল কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা ও অগ্রগতি পর্যালোচনার সুবিধার জন্য বছরে একাধিক সভা করার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন। সভায় বক্তব্য রাখেন ইআরডি সচিব শরিফা খান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সরকারের সচিব) মাহফুজা আক্তার, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জাফর উদ্দিন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন।

সভাটি পরিচালনা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান। এছাড়া, বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট  বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দফতরের ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্য ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে মতামত প্রদান করেন।