বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান বিজনেস সামিট এপ্রিলে

বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনাময় দেশ উজবেকিস্তান। পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানির পাশাপাশি পোশাক খাতের কাচামালসহ তুলা আমদানির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া জনশক্তি রফতানিরও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশটিতে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রথমবারের মতো উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে দুই দেশের বেসরকারি পর্যায়ের যৌথ উদ্যোগে "বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান বিজনেস সামিট অ্যান্ড বিটুবি" আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে দুই দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা তাদের নিজস্ব তৈরি পণ্য ও সেবা তুলে ধরতে পারবেন।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেটে জার্নালিস্ট ফোরামের অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত উজবেকিস্তানের কনস্যুলার ড. ইঞ্জিনিয়ার তাহের শাহ,  বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টারের (বিটিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আব্দীন এবং তুর্কি বিডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টারের (বিটিসি) সহযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা এ সামিটের আয়োজন করছে। উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দের উইনধাম হোটেলে আগামী ২৬ ও ২৭ মে এ সামিট অনুষ্ঠিত হবে। সামিটের মূল উদ্দেশ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, বাইসাইকেল, সিরামিক পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, ফার্নিচার, হস্তশিল্প, কাপড়, পর্যটন, আইটি, আইটিএস, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্লাস্টিক, শিক্ষা সেবা, মানবসম্পদ ইত্যাদি পণ্য ও সেবার ভালো বাজার হতে পারে উজবেকিস্তান। এছাড়াও উজবেকিস্তান থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ, একই সাথে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য উজবেকিস্তান হতে পারে আদর্শ গন্তব্য। দেশটিতে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়লে মধ্য এশিয়া তথা পূর্ব ইউরোপের প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত হবে।

এ সময় ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. তাহের শাহ বলেন, উজবেকিস্তানের লোকজন যখন ইউরোপ-আমেরিকা থেকে পোশাক কেনেন তখন তারা দেখেন মেইড ইন বাংলাদেশ ট্যাগ। তাই তাদের আগ্রহ বাড়ছে। পাশাপাশি ওই দেশের সরকারও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। মাত্র ২ টাকা ইউনিটে বিদ্যুৎ, গ্যাস প্রায় ফ্রি, এছাড়া জায়গাও দিচ্ছে। এসব সুবিধা নিচ্ছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। আমাদের দেশের উদ্যোক্তারাও এর সুযোগ নিতে পারেন। এজন্য আমাদের দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানো জরুরি।

বিটিসি’র প্রধান নির্বাহী জয়নাল আব্দীন জানান, বর্তমানে উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বিমান যোগাযোগ নেই। খরচ কমাতে দিল্লি হয়ে যেতে হয়। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ উন্নত করতে সরাসরি বিমান ফ্লাইট জরুরি। 

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ-উজবেকিস্তানের মধ্যে মোট ৪ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রফতানি করেছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য। অন্যদিকে উজবেকিস্তান থেকে ২ কোটি ১৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে। মূলত বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, পোশাক ও বস্ত্র খাতের পণ্য রফতানি হয়ে থাকে। আর দেশটি থেকে মূলত সুতা ও বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি করে বাংলাদেশ।