দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে গুগল পে: ডিজিটাল লেনদেনে নতুন যুগের সূচনা

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হতে যাচ্ছে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা গুগল পে। ‘গুগল ওয়ালেট’-ভিত্তিক এ সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করবে বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক। গুগল, মাস্টারকার্ড এবং ভিসার সহযোগিতায় এই নগদবিহীন লেনদেন প্ল্যাটফর্মটি আগামী ২৪ জুন ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে উদ্বোধন করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন. জ্যাকবসন এবং সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হোসেন খালেদের।

সিটি ব্যাংক প্রথম অংশীদার

জানা গেছে, গুগল পের সঙ্গে যুক্ত হতে যাওয়া প্রথম স্থানীয় ব্যাংক হচ্ছে সিটি ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র সিটি ব্যাংকের মাস্টারকার্ড ও ভিসা কার্ডধারীরা গুগল ওয়ালেট অ্যাপের মাধ্যমে গুগল পে সেবাটি ব্যবহার করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য ব্যাংকও এ সেবার সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের কার্ডধারীরাও সুবিধাটি পাবেন।

কীভাবে কাজ করবে গুগল পে

ব্যবহারকারীরা তাঁদের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে গুগল পে অ্যাপ ডাউনলোড করে সিটি ব্যাংকের কার্ড যুক্ত করতে পারবেন। একবার সেটআপ সম্পন্ন হলে স্মার্টফোন ‘ট্যাপ’ করেই যেকোনো পয়েন্ট-অব-সেল (পিওএস) টার্মিনালে অর্থ পরিশোধ করা যাবে, যেখানে মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ড গ্রহণযোগ্য। বিশেষ সুবিধা হলো—লেনদেনের জন্য কার্ড বহনের প্রয়োজন নেই; শুধুমাত্র স্মার্টফোনই যথেষ্ট।

নিরাপদ প্রযুক্তি ‘টোকেনাইজেশন’

গুগল পে সেবায় আধুনিক ‘টোকেনাইজেশন’ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে গ্রাহকের আসল কার্ড নম্বরের পরিবর্তে একটি ইউনিক টোকেন তৈরি হয়, যা প্রতিবার আলাদা হয় এবং শুধুমাত্র নির্ধারিত লেনদেনের জন্যই কার্যকর। ফলে কার্ডের মূল তথ্য তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে শেয়ার হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।

একজন শীর্ষস্থানীয় পেমেন্ট গেটওয়ে কর্মকর্তার ভাষ্য, “গুগল পের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—এখন আর কার্ড বহনের ঝামেলা নেই, স্মার্টফোনেই সবকিছু।”

গ্রাহকের জন্য ফি মুক্ত সেবা

গুগল পে ব্যবহারের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো অতিরিক্ত ফি বা চার্জ নেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। দেশ ও বিদেশে যেকোনো স্থান থেকেই এ সেবার মাধ্যমে দ্রুত, নিরাপদ এবং স্পর্শবিহীন লেনদেন করা যাবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গুগল পে চালুর মধ্য দিয়ে দেশে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে, যা নগদহীন অর্থনীতির পথে বাংলাদেশের যাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করবে।