ডিজিটাল কমার্সের আওতায় ‘এমএলএম’ ব্যবসা করা যাবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ডিজিটাল কমার্সের আওতায়  ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত কোনও ধরনের লটারির আয়োজন করতে পারবে না। মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা নেটওয়ার্ক ব্যবসায় পরিচালনা করা যাবে না।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই)  সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি (জুম প্লাটফর্মে) ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১’ জারির বিষয়ে অবহিতকরণ সংক্রান্ত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন,  ‘ডিজিটাল কমার্সের আওতায় নেশা সামগ্রী, বিস্ফোরক দ্রব্য, বা অন্যকোনও নিষিদ্ধ সামগ্রী, বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। এ ছাড়াও জুয়া বা অনলাইন বিটিং, বা অনলাইন গেমবলিংয়ের  আয়োজন বা অংশগ্রহণ করা যাবে না।’

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দেশিকার ফলে মার্কেটপ্লেসে বিক্রয়যোগ্য পণ্য ও সেবার তথ্য প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয়, সাধারণ নিয়মাবলী, মার্কেটপ্লেসে পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন, পণ্য ডেলিভারি, অগ্রিম পরিশোধিত মূল্য সমন্বয় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা গ্রাহকদের জন্য সহায়ক হবে।’

তিনি বলেন, ‘‘পণ্য বিক্রেতা বা তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ‘স্টকে নেই’ কথাটি স্পষ্টভাবে পণ্যের পাশে লিপিবদ্ধ করেতে হবে। নিত্যপণ্য ও খাদ্যসামগ্রী  বা সংখ্যায় প্রকাশ করা যায় না— এমন পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে স্টকের পরিমাণের পরিবর্তে  ‘অ্যাভেইলেবল  ফর ডেলিভারি’ কাথাটি লেখা থাকতে হবে। অগ্রিম মূল্য আদায়ের ক্ষেত্রে প্রদর্শিত পণ্য অবশ্যই দেশের ভেতরে ‘রেডি টু শিপ’ পর্যায়ে থাকতে হবে।  সম্পূর্ণ মূল্য গ্রহণের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি পারসন বা প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করার মতো অবস্থায় নেই— এমন পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যমূল্যের ১০% এর বেশি অগ্রিম গ্রহণ করা যাবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ‘এসক্রো সার্ভিস’ এর মাধ্যমে শতভাগ পর্যন্ত অগ্রিম গ্রহণ করা যাবে। বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শিত পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য ডেলিভারিম্যান বা ডেলিভারি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতে হবে এবং ক্রেতাকে তা টেলিফোন, ই-মেইল বা এসএমএস-এর মাধ্যমে জানাতে হবে।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করা হয়ে থাকলে, ক্রেতা ও বিক্রেতা একই শহরে অবস্থান করলে, ক্রয়াদেশ গ্রহণের পর সর্বোচ্চ পাঁচ দিন এবং ভিন্ন শহরে বা গ্রামে অবস্থিত হলে, সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি প্রদান করতে হবে। পচনশীল দ্রব্য দ্রুততম সময়ে ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। ডেলিভারির সময় যাতে পণ্যের কোনও ক্ষতি না হয়, সেজন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।  যে কোনও ধরনের ঘোষিত ডিসকাউন্ট বিক্রয় কার্যক্রমের  সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করতে হবে। ক্যাশব্যাক অফার মূল্য পরিশোধের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হতে হবে।’

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ব্যংকের মহাব্যবস্থাপক, বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রতিনিধি, ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার, বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ভার্চুয়ালি সভায় সংযুক্ত ছিলেন।